
চীনে গরুর মাংসের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। স্থানীয় বাজারে সরবরাহ বাড়ায় মাংসের দাম সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমেছে। দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমদানিকৃত গরুর মাংসের বিষয়ে একটি তদন্ত শুরু হবে। চীন গরুর মাংসের বিশ্বে বৃহত্তম আমদানিকারক ও ভোক্তা।
চীনে মাংস আমদানিতে বিধিনিষেধ আরোপ হলে ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা এবং অস্ট্রেলিয়ার মতো প্রধান সরবরাহকারী দেশগুলো অর্থনৈতিক চাপে পড়বে। ২০২৩ সালে চীন প্রায় ১,৪২০ কোটি ডলার মূল্যের গরুর মাংস আমদানি করেছিল, যার ৪২% ব্রাজিল থেকে, ১৫% আর্জেন্টিনা থেকে, এবং ১২% অস্ট্রেলিয়া থেকে এসেছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে জানানো হয়, ২০১৯ থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত চীনে আমদানি করা তাজা ও হিমায়িত গরুর মাংসের বিশাল প্রবৃদ্ধি স্থানীয় শিল্পে বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। এই পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে একটি আট মাসব্যাপী তদন্ত পরিচালিত হবে। চীনের পশুসম্পদ সমিতি এবং অন্যান্য সংস্থার আবেদনের ভিত্তিতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
চীনে অর্থনীতির ধীরগতির কারণে ভোক্তারা মাংস কেনার ক্ষেত্রে সংযমী হয়েছে। গরু, শূকর, ও পোলট্রির মাংসের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। বর্তমানে প্রতি কেজি গরুর মাংসের গড় দাম ৫৯.৮২ ইউয়ান (৮.২০ ডলার), যা দুই বছর আগের তুলনায় ২২% কম।
মাংসের দাম কমে যাওয়া ঠেকাতে চীনের সরকার কৃষকদের গরুর সংখ্যা সীমিত রাখতে বলেছে। তবে আমদানি বৃদ্ধির কারণে এই উদ্যোগ ফলপ্রসূ হয়নি। এদিকে ব্রাজিল সরকার দাবি করছে, তাদের মাংস রপ্তানি চীনের চাহিদা মেটাতে সাহায্য করছে এবং স্থানীয় শিল্পের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে না।
গরুর মাংসের পাশাপাশি চীন ইউরোপ থেকে আমদানি করা দুগ্ধজাত এবং শূকরের মাংসেও বিধিনিষেধ আরোপের বিষয়টি ভাবছে। বিশ্লেষকদের মতে, এই পদক্ষেপ ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিদ্যুচ্চালিত গাড়ির ওপর চীনের শুল্ক পরিকল্পনার প্রতিশোধ হিসেবে নেওয়া হতে পারে।