লক্ষ্যমাত্রার ১ শতাংশ ধানও সংগ্রহ হয়নি

সমকালীন কৃষি/
এগ্রিবার্তা ডেস্ক

(১ বছর আগে) ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, সোমবার, ১১:৩২ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ৭:৫৯ পূর্বাহ্ন

agribarta

চট্টগ্রাম কৃষি অঞ্চল থেকে সরকারিভাবে ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অন্যান্য অঞ্চল থেকে কম নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রা কম নির্ধারণ হলেও কয়েক মৌসুম ধরেই সেই লক্ষ্যপূরণে ব্যর্থ চট্টগ্রাম জেলা খাদ্য অধিদপ্তর। চলতি আমন মৌসুম থেকে চট্টগ্রাম জেলায় ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ৯ হাজার ২৩৫ টনের বিপরীতে সংগ্রহ করা হয়েছে মাত্র সাড়ে আট টন। যা মোট লক্ষ্যমাত্রার ১ শতাংশের অনেক কম। গুদামে ও খোলাবাজারে দামের পার্থক্য, ধান বিক্রিতে নানা সমস্যার কারণে সরকারি পর্যায়ে ধান বিক্রি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন কৃষকরা। সরকারের ধান-চাল সংগ্রহ কর্মসূচিতে কৃষকদের সঙ্গে সমন্বয় করা না গেলে মিল মালিকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত দামে ধান বা চাল সংগ্রহ করতে হতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

চট্টগ্রাম জেলা খাদ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চট্টগ্রাম জেলায় ধানের মোট আবাদ হয়েছে ১ লাখ ৭৯ হাজার ৬৩৮ হেক্টর জমিতে। উৎপাদন হয়েছে ৫ লাখ ১৮ হাজার টনের বেশি ধান। তবে সরকারি পর্যায়ে ধান ও চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা বেশি থাকলেও চট্টগ্রম অঞ্চলে সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা দেশের অন্যান্য কৃষি অঞ্চল থেকে অনেক কম। ১৭ নভেম্বর থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চট্টগ্রাম জেলায় আমন মৌসুমের উৎপাদিত ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৯ হাজার ২৩৫ টন। এছাড়া ২৯৩ টন সিদ্ধ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। তবে আতপ চাল সংগ্রহের কোনো লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়নি।

সর্বশেষ গত ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চট্টগ্রামে মাত্র সাড়ে আট টন ধান এবং ৯০ টন চাল সরকারিভাবে সংগ্রহ করতে পেরেছে জেলা খাদ্য অধিদপ্তর। যা ধান সংগ্রহের ১ শতাংশের কম, অন্যদিকে চাল সংগ্রহ করা হয়েছে মাত্র ৩১ শতাংশের কাছাকাছি। সরকার নির্ধারিত মণপ্রতি ধানের দাম ধরা হয়েছে ১ হাজার ৮০ টাকা। অন্যদিকে খোলাবাজারে ধান বিক্রি হচ্ছে গড়ে ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা। একদিকে দামের পার্থক্য, অন্যদিকে সরকারিভাবে বিক্রি করা ধানের দাম পেতে দীর্ঘসূত্রতার কারণে খোলাবাজারে ধান-চাল বিক্রিতে আগ্রহী হয়ে পড়ছেন চাষীরা। সরকারি গুদামে ধান বিক্রি করতে গেলে নানা অজুহাতে ধান নিতে অনীহা প্রকাশ করা হয় বলে অভিযোগ করেন কৃষকরা।

সাধারণত কৃষি অধিদপ্তর কৃষকদের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ করলেও মিল মালিকদের কাছ থেকে চাল সংগ্রহ করা হয়। সর্বশেষ বোরো সংগ্রহ কর্মসূচিতে চাল সরবরাহে ব্যর্থ হওয়ায় চট্টগ্রামের ১৬ চালকলের লাইসেন্স বাতিল করেছে খাদ্য বিভাগ। এছাড়া পাঁটি চালকলের মালিককে কারণ দর্শানোর পাশাপাশি তাদের অসরবরাহকৃত চালের আনুপাতিক হারে জামানত বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। চলতি আমন মৌসুমেও যদি চাল সংগ্রহে মিল মালিকরা কোনো কারসাজি করেন সেক্ষেত্রে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

চট্টগ্রাম জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আবদুল কাদের বলেন, ‘‌চলমান মৌসুমে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আমন ধান ও চাল কেনার সময়সীমা আছে। এখন পর্যন্ত সাড়ে আট টন ধান এবং ৯০ টন সিদ্ধ চাল সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে। বাকি সময়ে আরো কিছু ধান-চাল সংগ্রহ করা সম্ভব হবে। তবে লক্ষ্যমাত্রা আদৌ পূরণ করা সম্ভব হবে কিনা সে বিষয়ে কিছু বলতে পারছি না।’