মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়া বনাঞ্চলকে পার্ক বানানো হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, ‘লাউয়াছড়া বনটিকে আমরা রমনা পার্ক বানিয়ে ফেলেছি। সেখানে মানুষকে ট্রেনিং দিয়েছি, কেমন করে ট্যুরিস্ট নিয়ে হাঁটতে হয়। এটি উচিত হয়নি। বন থাকবে বনের মতো, বন কেন পার্ক হবে!’
গত বুধবার দুপুরে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার গাজীপুর সাফারি পার্ক পরিদর্শনে গিয়ে এ কথা বলেন সরকারের এই উপদেষ্টা। এর আগে দুপুর পৌনে ১২টায় তিনি পার্কে প্রবেশ করেন। সম্প্রতি সেখান থেকে চুরি হওয়া তিনটি লেমুর সম্পর্কে কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন ও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
২৩ মার্চ গাজীপুর সাফারি পার্ক থেকে চুরি যাওয়া লেমুর প্রসঙ্গে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘ম্যাকাও বলেন আর লেমুর বলেন, কোনোটাই এখানে হারিয়ে যাওয়ার জন্য দেওয়া হয়নি। সব কটাকে সুরক্ষিত রাখার জন্য দেওয়া হয়েছে। হারিয়ে গেছে মানেই হলো, আমার যা করার কথা, আমি তা করতে পারিনি বা করিনি। লেমুরের ঘটনাটা একদম যতটুকু বিস্তারিত সম্ভব, আমি বিস্তারিতভাবে তদন্ত করব।’ তিনি আরও বলেন, দুর্লভ প্রাণীগুলোই কেবল চলে যাচ্ছে। এটা একটা বিশাল প্রশ্ন। দুর্লভ পশুপাখিগুলো তারাই নেবে, যারা বিষয়টাকে জানে এবং বোঝে। তার মানে, এর ভেতরে একটি অর্গানাইজড ক্রাইম সেক্টর আছে কি না, তা খতিয়ে দেখতে হবে এবং ভেঙে দিতে হবে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্দেশে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বলেন, গাজীপুরে একটি সাফারি পার্ক আছে। আপনাদের কিন্তু দায়িত্ব বেশি। কারণ, এটি আপনাদের এলাকায় আছে।
অবৈধভাবে বনভূমি দখলের বিষয়ে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘কাউকে যদি ঘর বা দোকান বানিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন হয়, আপনার জায়গাতেই দিন। কিন্তু বনের জায়গায় দোকান বা ঘর—এটি হতে পারে না। আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর গাজীপুরে ৮৮ একর বনের জমি বেদখল হয়েছিল, ইতিমধ্যে ৫০ একর বনভূমি উদ্ধার করেছি। বাকিটাও উদ্ধার করব।’
গাজীপুর সাফারি পার্ক পরিদর্শনের সময় উপদেষ্টার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন গাজীপুরের জেলা প্রশাসক নাফিসা আরেফীন, পুলিশ সুপার চৌধুরী মো. যাবের সাদেক, বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চল ঢাকার বিভাগীয় বন কর্মকর্তা শারমীন আক্তার প্রমুখ।
