চলমান গ্রীষ্মের অসহনীয় তাপদাহে শুধু ঘাম হওয়া বা শরীর দুর্বল লাগার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছে না মানুষের ভোগান্তি। অনেকেই না বুঝেই পড়ছেন হিট স্ট্রোকের ঝুঁকিতে—যা সময়মতো চিকিৎসা না পেলে হতে পারে মারাত্মক প্রাণঘাতী। এ অবস্থায় হিট স্ট্রোকের কারণ ও লক্ষণগুলো জানা, দ্রুত প্রাথমিক ব্যবস্থা গ্রহণ এবং চিকিৎসকের শরণ নেওয়াই হতে পারে জীবনরক্ষাকারী সিদ্ধান্ত।
কেন হয় হিট স্ট্রোক?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যখন শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ব্যর্থ হয়—অর্থাৎ শরীর তার নিজস্ব উপায়ে অতিরিক্ত তাপ নিঃসরণ করতে না পারে—তখন হিট স্ট্রোকের আশঙ্কা দেখা দেয়। এটি মূলত দু'ধরনের হয়ে থাকে:
- ক্ল্যাসিকাল হিট স্ট্রোক: যারা বেশি সময় গরম ও আর্দ্র পরিবেশে থাকেন, তাদের মধ্যে বেশি দেখা যায়।
- এক্সারশনাল হিট স্ট্রোক: যারা রোদের মধ্যে শারীরিক শ্রম করেন, তাদের ঝুঁকি বেশি।
গবেষণা অনুযায়ী, ডিহাইড্রেশন, গরমে অতিরিক্ত পরিশ্রম, বয়সজনিত দুর্বলতা, ওষুধের প্রভাব এবং বদ্ধ পরিবেশে থাকার কারণে হিট স্ট্রোক হতে পারে।
হিট স্ট্রোকের লক্ষণ
শরীরের তাপমাত্রা ১০৪°F বা ৪০°C ছাড়িয়ে যাওয়া ছাড়াও যেসব উপসর্গ দেখা দিতে পারে তা হলো:
- ত্বক শুকনো ও লাল হয়ে যাওয়া
- ঘাম বন্ধ হয়ে যাওয়া
- মাথা ঘোরা ও ভারসাম্য হারানো
- তীব্র মাথাব্যথা
- বিভ্রান্তি, প্রলাপ, হ্যালুসিনেশন
- অজ্ঞান হয়ে যাওয়া বা খিঁচুনি
- দ্রুত শ্বাস ও দুর্বল পালস
- বমি, ডায়রিয়া, চোখে ঝাপসা
প্রাথমিক করণীয়
লক্ষণ দেখা দিলেই রোগীকে রোদ বা গরম পরিবেশ থেকে সরিয়ে শীতল স্থানে নিতে হবে। ঢিলা করে দিতে হবে চাপা পোশাক। মাথা, ঘাড় ও বগলে ভেজা কাপড় চেপে ধরতে হবে। সম্ভব হলে মাথা ও মুখ ধোয়ার ব্যবস্থা করুন এবং বাতাস চলাচলের সুবিধা নিশ্চিত করুন।
এসব ব্যবস্থা নেওয়ার পরও দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। মনে রাখতে হবে, হিট স্ট্রোক শুধু শরীরের বাহ্যিক লক্ষণ নয়, শরীরের অভ্যন্তরেও ক্ষতি করে যেতে পারে।
এ বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি প্রাথমিক চিকিৎসা বিষয়ক প্রশিক্ষণও জরুরি বলে মনে করেন স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।
