ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার কাপাশহাটিয়া ইউনিয়নের পায়রাডাঙ্গা গ্রামের আব্দুল আলিম এক সময় চরম আর্থিক সংকটে পড়ে যান। ২০১৯ সালে তিনি ৯.৫ একর জমিতে তিনটি পুকুর লিজ নিয়ে পাবদা, তেলাপিয়া ও দেশি টেংরা মাছের চাষ শুরু করেন। শুরুর দিকে সামান্য লাভ হলেও পরের বছর করোনার ধাক্কায় কার্যত মুখ থুবড়ে পড়ে তার মৎস্য প্রকল্প।
আলিম জানান, “করোনার সময় মাছ বিক্রি তো দূরের কথা, মাছের খাবার কেনার টাকাও ছিল না হাতে। প্রায় হাল ছেড়ে দিচ্ছিলাম।” ঠিক তখনই আশার ‘মৎস্য চাষ প্রকল্প’ খাত থেকে ৫ লাখ টাকা ঋণ পান তিনি। সেখান থেকেই তার ঘুরে দাঁড়ানো শুরু।
ঋণ পাওয়ার পর নতুন উদ্যমে কাজ শুরু করেন আলিম। সরকারি মৎস্য বীজ উৎপাদন খামার থেকে রুই, কাতলা, মৃগেল, তেলাপিয়া ও পাবদার পোনা সংগ্রহ করে পুকুরে ছাড়েন। নিয়মিত পরিচর্যা ও সঠিক সময়ে বাজারজাত করে তিনি ভালো লাভ করতে সক্ষম হন। পরবর্তীতে আরও একবার ৫ লাখ টাকার ঋণ নিয়ে জমি খনন করে নতুন পুকুর তৈরি করেন এবং পাঙ্গাশসহ কার্পজাতীয় মাছ চাষ শুরু করেন। সে বছরই খরচ বাদ দিয়ে প্রায় ৭ লাখ টাকা লাভ হয় তার।
বর্তমানে তার পুকুরের সংখ্যা সাতটি, আয়তনে ৩৫ একর। তাতে মিশ্রভাবে তেলাপিয়া, পাবদা, দেশি টেংরা, রুই, কাতলা ও মৃগেল চাষ করে তিনি এলাকার একজন সফল মৎস্য উদ্যোক্তায় পরিণত হয়েছেন। তার সাফল্য দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে অনেকেই মাছ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।
আলিম বলেন, “আশার ঋণে সার্ভিস চার্জ কম, কিস্তিতে পরিশোধ করা যায়। ঋণের পুরো টাকা প্রকল্পে বিনিয়োগ করে ভালোভাবে আয়ও হচ্ছে, আবার কিস্তি পরিশোধ করতেও কষ্ট হয় না।”
আশার টেকনিক্যাল অফিসার কিলন চন্দ্র রায় জানান, “আলিমকে শুধু ঋণই নয়, বরং আধুনিক মাছচাষ প্রযুক্তি, সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে সংযোগ এবং প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিয়ে সহায়তা করা হয়েছে। তার সাফল্য অন্যদের জন্যও রোল মডেল হয়ে উঠবে।”
