ফুলকপির দাম ২-৩ টাকা, বাজারেই ফেলে যাচ্ছেন হতাশ কৃষকেরা

সমকালীন কৃষি/
এগ্রিবার্তা ডেস্ক

(১ বছর আগে) ৩ মার্চ ২০২৩, শুক্রবার, ৮:০৭ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ৮:০৭ পূর্বাহ্ন

agribarta

উপযুক্ত দাম না পাওয়ায় বাজারেই ফুলকপি ফেলে যাচ্ছেন কৃষক। আজ বুধবার সকালে এমন চিত্র দেখা গেছে নীলফামারীর সৈয়দপুরের পাইকারি সবজি বাজারে। কয়েকজন কৃষক জানালেন, বাজারে ফুলকপি এনে সেভাবে দাম পাচ্ছেন না। এর ফলে বাধ্য হয়ে ফুলকপি ফেলে দিয়ে যাচ্ছেন।

সৈয়দপুরে চলতি মৌসুমে ফুলকপি ও বাঁধাকপির বাম্পার ফলন হলেও বাজারে বর্তমানে ন্যায্য দাম না পাওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছেন সবজিচাষিরা। বিক্রির জন্য বাজারে নিয়ে এলেও, দাম না থাকায় বাজারেই ফুলকপি ফেলে দিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। অনেকের আবার ফুলকপি খেতেই নষ্ট হচ্ছে। কেউ কেউ গরুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করছেন ফুলকপি।

সৈয়দপুরের পাইকারি সবজি বাজারে ফুলকপি বিক্রি করতে আসেন বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের কৃষক লুৎফর রহমান। তিনি জানান, দুই বিঘা জমিতে ফুলকপি চাষ করেছিলেন। এখন ফুলকপির দাম নেই। প্রতিটি ফুলকপি দুই থেকে তিন টাকার বেশি দাম উঠছে না। এর ফলে বাজারে ফুলকপি ফেলে দিতে হচ্ছে। অথচ তাঁর ফুলকপি চাষে প্রায় ৩৬ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এমন লোকসান হলে জীবন চালাবেন কীভাবে?

আজ সকালে সৈয়দপুর বাইপাস পাইকারি সবজি বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে এক পাশে স্তূপ করে ফুলকপি ফেলে রেখে দিয়েছেন কৃষকেরা। সেখানে কথা হয় সবজি বিক্রেতা কৃষক মাহাবুল আলমের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ফুলকপি চাষের খরচ ওঠা তো দূরে কথা, ভ্যানভাড়াও উঠছে না। আমরা মাঠে মারা যাচ্ছি। প্রতি বিঘা জমিতে ফুলকপি চাষ করে গড়ে ১৫ হাজার টাকা করে লোকসান হচ্ছে আমাদের। আমি এবার সবজি চাষ করে নিঃস্ব হয়ে গেছি।’

পাশেই বাঁধাকপি বিক্রি করছিলেন পোড়ারহাট থেকে আসা কৃষক সাইদুল ইসলাম। প্রতিটি বাঁধাকপি চার–পাঁচ টাকা করে বিক্রি করেন তিনি। দেড় বিঘা জমিতে বাঁধাকপি চাষ করে লোকসান হয়েছে বলে জানালেন সাইদুল।

সবজি আড়তের পাইকার শাহিদ হোসেন বলেন, মূলত আবহাওয়া পরিবর্তন হওয়ায় এখন মানুষ তেমন ফুলকপি খাচ্ছে না। সেই সঙ্গে বাইরের পাইকাররাও ফুলকপি নিচ্ছেন না। এর ফলে ফুলকপির ভালো দাম পাচ্ছেন না কৃষকেরা।

বাজার ঘুরে জানা যায়, পাইকারি বাজারে আজ আলু বিক্রি হচ্ছে ১২ টাকা কেজি, আদা ৭০–৯০ টাকা কেজি, পেঁয়াজ ২০–২৫ টাকা, রসুন ৮০–১০০ টাকা, শুকনা মরিচ ৩৮০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১১০–১২৫ টাকা, ধনেপাতা ৩০ টাকা, শসা ১৫–২০ টাকা, টমেটো ১৫ টাকা, শিম ৪০–৫০ টাকা, গাঁজর ১৫–১৮ টাকা এবং বেগুন ১৮–২০ টাকা কেজি। এ ছাড়া লেবু ১৬ টাকা হালি ও মিষ্টিকুমড়া ২০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

সৈয়দপুর উপজেলার অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা মমতা সাহা বলেন, চলতি মৌসুমে উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে বিভিন্ন ধরনের সবজির চাষ হয়েছে। অন্যবারের চেয়ে এবার আবহাওয়া ভালো থাকায় শস্যের ফলন অনেক ভালো হয়েছে। এর ফলে ফুলকপির দাম কমে যেতে পারে।