ঢাকা, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, রবিবার

বাকৃবিতে দুই দফায় ৮০০ কেজি বিনা ধান-১৭ বীজ বপন সম্পন্ন



ক্যাম্পাস

বাকৃবি প্রতিনিধি:

(৫ দিন আগে) ২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, সোমবার, ১২:৪১ অপরাহ্ন

agribarta

দেশের দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলের আকষ্মিক বন্যা পরবর্তী কৃষি ও কৃষকের ক্ষতি পুষাতে এগিয়ে এসেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীরা।

বন্যাকবলিত কৃষকদের পাশে দাঁড়াতে বিনামূল্যে নাবি আমন ধানের চারা বিতরণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন তারা। এ উদ্যোগের অংশ হিসেবে বাকৃবিতে পাঁচ একর জমিতে বিনা ধান-১৭ এর বীজ বপন করার কাজ চলছে। ইতোমধ্যে প্রথম দফায় এক একর জমিতে ২০০ কেজি ও দ্বিতীয় দফায় দেড় একর জমিতে বিনা ধান-১৭ এর ৬০০ কেজি বীজ বপন সম্পন্ন করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাকৃবির প্রধান খামার তত্ত্বাবধায়ক (ভারপ্রাপ্ত) মো. জিয়াউর রহমান। 

জানা যায়, সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের বিনামূল্যে ধানের চারা বিতরণের জন্য 'অ্যাগ্রি স্টুডেন্ট'স অ্যালায়েন্স বিডি' এগিয়ে আসে। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, হাজী দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক এবং শিক্ষার্থী, বিভিন্ন এলাকার কৃষি উদ্যোক্তা, বীজ কোম্পানি এবং কর্পোরেট ব্যক্তিবর্গকে নিয়ে গঠিত সংগঠন 'অ্যাগ্রি স্টুডেন্ট'স অ্যালায়েন্স বিডি'। এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে 'কৃষিবিদ ফাউন্ডেশন ফর হিউম্যানিটি'-এর আর্থিক সহযোগিতায় বন্যার্ত কৃষকদের মাঝে ধানের চারা ও কৃষি উপকরণ সরবরাহ করছে। এ পর্যন্ত তারা ২ লক্ষ টাকা আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করেছে।

বীজ বপনের সাথে সংশ্লিষ্ট বাকৃবির একাধিক স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী জানান, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫ একর জমিতে বিনা ধান-১৭ এর বীজ বপন করা হবে। প্রথম দফায় গত ২৮ জুলাই বাকৃবির কৃষিতত্ত্ব মাঠের এক একর জমিতে ২০০ কেজি বীজ বপন করা হবে হয়। দ্বিতীয় দফায় বিশ্ববিদ্যালয়ের খামার ব্যবস্থাপনা শাখার দেড় একর জমিতে ৬০০ কেজি বীজ বপন করেন তারা। পাশাপাশি নোয়াখালি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ একর, চট্রগ্রামের হাট হাজারিতে ৪ একর ও লক্ষীপুরে ২ একরসহ মোট ১২ একর জমিতে নাবি আমন ধানের চারা উৎপাদনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। উৎপাদিত চারা গুলো আমরা বন্যাকবলিত কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা হবে।

বীজ বপন কর্মসূচি চলাকালীন শিক্ষার্থীদের সাথে মাঠে সরাসরি উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক শহীদুল হক, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ মো. হেলাল উদ্দীন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. আসাদুজ্জামান সরকার, কৃষিতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক মো. মশিউর রহমান ও অধ্যাপক আহমদ খায়রুল হাসান, কীটতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ তোফাজ্জল হোসেনে হাওলাদার, খামার ব্যবস্থাপনা শাখার প্রধান তত্বাবধায়ক (ভারপ্রাপ্ত) মো জিয়াউর রহমান প্রমুখ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন 'কৃষিবিদ ফাউন্ডেশন ফর হিউম্যানিটি'-এর সদস্যবৃন্দ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীবৃন্দ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী এবং মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইন্সটিটিউট, নেত্রকোনা শাখার প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মোখলেছুর রহমান বলনে, চারা উৎপাদন থেকে শুরু করে সকল ধাপেই একটি পরামর্শ প্রদানকারী দল কাজ করবে। ধানের ক্ষেত্রে বড় একটি সমস্যা হলো চিটা হয়ে যাওয়া। এক্ষেত্রে যদি জমিতে বোরন যুক্ত সার প্রয়োগ করা যায় তাহলে চিটা হওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশে কমে যাবে। অন্তত ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ উৎপাদন থাকবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

উপস্থিত শিক্ষকবৃন্দ বলেন, এই ১২ একর জমিতে উৎপাদিত চারা দিয়ে ৭৬০ বিঘা জমিতে ধান চাষ করা যাবে, যা প্রায় সহস্রাধিক কৃষকের মাঝে বিতরণ করা সম্ভব হবে।

অ্যাগ্রি স্টুডেন্টস অ্যালায়েন্স’-এর অন্যতম উদ্যোক্তা মুখলেছুর রহমান বলেন, ‘আমরা হিসাব করেছি। পুরো কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে ২২ লাখ টাকা প্রয়োজন। ৩-৪ লাখ টাকা আমরা এর মধ্যে পেয়েও গেছি। বাকি টাকাও স্পনসর, অ্যালামনাই ও কৃষি উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে সংগ্রহ করার চেষ্টা করছি।