গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের পরিবারের সদস্য, আহত ও পঙ্গু ছাত্ররা আজ দৃক গ্যালারিতে আন্দোলনের ঐতিহাসিক পর্যায়গুলোর কিছু উল্লেখযোগ্য ছবি সমন্বিত একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনী উদ্বোধন করেছেন।
৩৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দৃক গ্যালারি ‘যুবদের নির্ভীক সাহস এবং স্বৈরশাসক হাসিনার পতন’ প্রতিপাদ্য নিয়ে ‘বুক পেতেছি , গুলি কর’ শিরোনামে এ প্রদর্শনীর আয়োজন করে। ১৬ দিনব্যাপী প্রদর্শনী চলবে ২১ সেপ্টেম্বর প্রতিদিন বিকাল ৩ টা থেকে ৮ টা পর্যন্ত।
প্রদর্শনী উদ্বোধনের পরপরই, সব জাতি-বর্ণ-বয়সী এবং বিদেশী লোকদের প্রদর্শনী পরিদর্শন করতে দেখা যায় এবং কিছু ছবির দিকে ইশারা করে অন্যদের সাথে আড্ডা দেওয়ার পাশাপাশি ছবি তুলতে দেখা যায়। ফটোগ্রাফার এবং দৃকের প্রতিষ্ঠাতা শহিদুল আলম বলেন, ‘ছবিসহ একটি বই প্রকাশের পাশাপাশি আমাদের পরিকল্পনা আছে ছবি সমন্বিত একটি চলমান জাদুঘর করার। যা সারাদেশের সকল স্তরের মানুষকে দেখার সুযোগ দিতে পারে।’
প্রদর্শনী উদ্বোধনের আগে দৃক গ্যালারি মিলনায়তনে বীরাঙ্গনাদের স্মরণে এক আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন শহীদ পরিবারের সদস্য, আহত ছাত্র ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক সমন্বয়ক। সাংবাদিক ও গবেষক ডক্টর সায়দিয়া গুলরুখের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন ঢাকা টাইমসের সাংবাদিক হাসান মেহেদীর স্ত্রী ফারহানা ইসলাম পপি, আহত ছাত্র সাইফুদ্দিন এমদাদ , জুলফিকার আহমেদ শাকিলের মা, ইডেন মহিলা কলেজের সমন্বয়ক শাহিনুর সুমি ও ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্র ফাইয়াজ ফারহানের খালা নাজিয়া খান।
আলোচনায় অংশ নেওয়া শহীদ পরিবারের সদস্যরা তাদের প্রিয়জনকে স্মরণ করে কান্নায় ভেঙে পড়েন। ফারহান ফাইয়াজের খালা নাজিয়া খান বলেন, ‘আমাদের আর হারানোর কিছু নেই কারণ আমরা সবকিছু হারিয়েছি। আমরা যা চাই তা হল খুনিদের খুঁজে বের করা এবং এটিই আমাদের একমাত্র চাওয়া। ’ তিনি আরো বলেন, আমরা শহীদ পরিবারের সদস্যরা রাষ্ট্রের কাছে হত্যাকারীদের বিচার ছাড়া কিছুই চাই না।
ঢাকা টাইমসের সাংবাদিক হাসান মেহেদীর স্ত্রী ফারহানা ইসলাম পপি বলেন, ‘তারা আমার স্বামীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে কারণ তারা জ্ঞান হারানো পর্যন্ত তার বুকে বুট দিয়ে আঘাত করতে থাকে এবং গুলি করে। পপি আরো বলেন, ‘আমার দুটি মেয়ে আছে। আমার স্বামী আমার বড় মেয়েকে ডাক্তার বানাতে চেয়েছিলেন, তিনি তাকে পরের বছর একটি নামী স্কুলে ভর্তি করতে চেয়েছিলেন। আমি জানি না আমরা কীভাবে বেঁচে থাকব বা কীভাবে আমি তার স্বপ্নকে সত্যি করব।’