দেশে ইউরিয়া ও টিএসপির দাম বাড়ল ২৩ শতাংশ

উদ্যোক্তা /
এগ্রিবার্তা ডেস্ক

(১১ মাস আগে) ১২ এপ্রিল ২০২৩, বুধবার, ৩:০১ অপরাহ্ন

agribarta

ইউরিয়া, টিএসপি, ডিএপি ও এমওপি—এ চার ধরনের সারের দাম কেজিতে ৫ টাকা বাড়ানো হয়েছে। গত সোমবার থেকে নতুন এ মূল্য কার্যকর হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের ১০ এপ্রিলের এক চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে গতকাল সারের মূল্যবৃদ্ধির এ আদেশ জারি করা হয়।

কৃষক পর্যায়ে ৫ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি ইউরিয়া ২৭ টাকা, ডিএপি ২১, টিএসপি ২৭ ও এমওপি ২০ টাকা পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে। এর আগে ইউরিয়া ২২ টাকা, ডিএপি ১৬, টিএসপি ২২ ও এমওপির মূল্য ছিল প্রতি কেজি ১৫ টাকা। অর্থাৎ ইউরিয়া ও টিএসপি প্রায় ২৩ শতাংশ, ডিএপি ৩১ দশমিক ২৫ শতাংশ ও এমওপির ৩৩ শতাংশ মূল্য বেড়েছে।

একইভাবে ডিলার পর্যায়েও প্রতি কেজি ইউরিয়ার বর্তমান দাম ২০ টাকার পরিবর্তে ২৫ টাকা, ডিএপির ১৪ টাকার পরিবর্তে ১৯ টাকা, টিএসপির ২০ টাকার পরিবর্তে ২৫ টাকা ও এমওপির ১৩ টাকার পরিবর্তে ১৮ টাকা পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে। এর আগে গত বছরের আগস্টে ইউরিয়ার দাম ৬ টাকা বাড়িয়ে ১৬ টাকা থেকে ২২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল।

কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, চলমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক বাজারে সারের দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ায় সারের আমদানি যৌক্তিক পর্যায়ে রাখা এবং সারের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য মূল্য পুনর্নির্ধারণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

মন্ত্রণালয় জানায়, আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি কেজি ইউরিয়া সারের বর্তমান দাম ৪৮ টাকা, ডিএপি ৭০, টিএসপি ৫০ ও এমওপি ৬০ টাকা। এর ফলে ৫ টাকা দাম বৃদ্ধির পরও সরকারকে প্রতি কেজি ইউরিয়ায় ২১ টাকা, ডিএপিতে ৪৯, টিএসপিতে ২৩ ও এমওপিতে ৪০ টাকা ভর্তুকি দিতে হবে। বিগত তিন বছর ধরে আন্তর্জাতিক বাজারে সারের দাম প্রায় ৩-৪ গুণ বেড়েছে।

দেশে সারে প্রদত্ত সরকারের ভর্তুকি ২০২০-২১ অর্থবছরে ছিল ৭ হাজার ৪২০ কোটি টাকা। এর পরের অর্থবছর অর্থাৎ ২০২১-২২ অর্থবছরে লেগেছে ২৮ হাজার কোটি টাকা। আর চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রয়োজন হবে প্রায় ৪৬ হাজার কোটি টাকা। সারে ২০০৮-০৯ অর্থবছর থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছরে এখন পর্যন্ত সর্বমোট ১ লাখ ১৯ হাজার ৮৩৭ কোটি টাকা ভর্তুকি প্রদান করা হয়েছে।

কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘সারের দাম প্রতি কেজিতে ৫ টাকা বাড়ানো হয়েছে। ডিএপির দাম আগে ছিল ৯০ টাকা। আমরা ২০০৯ সালে সরকারে এসে এটার দাম ২৫ টাকা করেছি। ২০১৯ সালে করেছি ১৬ টাকা। পটাশিয়ামের দাম ৬০ টাকা থেকে ১৫ টাকা করেছি। ইউরিয়ার দাম ২০ টাকা করা হয়েছিল। আমরা খুব চেষ্টা করেছি কোনোভাবেই যেন সারের দাম না বাড়ে। সারের দাম বাড়লে কৃষকের উৎপাদন কমে যাবে। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হব। এ বিষয়টি আমলে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী সর্বাত্মক চেষ্টা করেছেন যাতে না বাড়াতে হয়। আন্তর্জাতিক বাজারে সারের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। পটাশিয়াম ২১৯-২৫০ ডলারে প্রতি টন কিনতে হতো। সেটা ১২০০ ডলারেও কিনেছি। ২০২০-২১ সালে ২৮ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হয়েছে। এ অর্থবছরের অক্টোবর পর্যন্ত ১৫ হাজার কোটি টাকা দিয়েছি। বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি সরকার দিতে পারছে না। দেয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। সার্বিক অর্থনীতির ব্যবস্থাপনা খুবই জটিল রূপ নিয়েছে। সার্বিক অর্থনীতিকে বাঁচানোর জন্যই সরকার সারের দাম কিছুটা বাড়াতে বাধ্য হয়েছে। এতে কৃষকরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তবে সামগ্রিক অর্থনীতিতে এটা সেভাবে প্রভাব ফেলবে না।’