ঢাকা, ১২ অক্টোবর ২০২৪, শনিবার

মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট যেন বৈষম্যের আঁতুড়ঘর।



কৃষি

এগ্রিবার্তা ডেস্ক:

(১ সপ্তাহ আগে) ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, রবিবার, ৩:১৫ অপরাহ্ন

agribarta

কৃষি মন্ত্রণালয়ের বর্তমান ১৮ টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৬ নং প্রতিষ্ঠান হচ্ছে মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট। প্রতিষ্ঠানটি ক্যাডার ও নন-ক্যাডার দুটি অংশে বিভক্ত। দুটি ভিন্ন ভিন্ন নিয়োগ বিধির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটিতে একই পদে ক্যাডার ও নন-ক্যাডার দুই অংশেই নিয়োগ প্রদান করা হয়। মহা আশ্চর্যের বিষয় একই পদে ক্যাডার ও নন-ক্যাডার নিয়োগ হলেও প্রশাসনিক, আর্থিক, বদলিসহ সব সিদ্ধান্তই থাকে ক্যাডার অংশের হাতে। অথচ নন-ক্যাডার কর্মকর্তারা গবেষণাগারে মাটি, পানি, সার ও উদ্ভিদ নমুনা বিশ্লেষণ করে আর ক্যাডার কর্মকর্তারা সেই বিশ্লেষণ রিপোর্ট কম্পাইল করে  উপজেলা নির্দেশিকা তৈরী করে।

ভ্রাম্যমান মৃত্তিকা গবেষণাগার (এমএসটিএল) এর মাধ্যমে গবেষণাগারের নন-ক্যাডার কর্মকর্তারা প্রতি অর্থবছরে খরিফ ও রবি মৌসুমে কৃষকের দোরগোড়ায় গিয়ে মাটি পরীক্ষা করে থাকে অথচ এই রিপোর্ট দেখিয়ে ক্যাডার কর্মকর্তারা মন্ত্রনালয় থেকে বিভিন্ন সুবিধা বাগিয়ে নেয়। এসআরডিআই এর মূল কাজ গবেষণাগারের নন-ক্যাডার কর্মকর্তারা করলেও পদে পদে তাঁদের বঞ্চিত করা হয়। ক্যাডার অংশের জন্য গাড়ির বরাদ্দ থাকলে নন-ক্যাডার অংশের সিনিয়র কর্মকর্তারাও গাড়ির সুবিধা পাননা।

বাজেট বরাদ্দ, বদলি, পদোন্নতি, বিদেশে প্রশিক্ষণ, উচ্চ শিক্ষা প্রতিটি ক্ষেত্রেই নন-ক্যাডার অংশটিকে বঞ্চিত করা হয়। নন-ক্যাডার অংশটি যেন দাসত্বের শিকলে বাঁধা। কৃষি মন্ত্রণালয় এই প্রতিষ্ঠানে একই পদে বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে ক্যাডার এবং নন-ক্যাডার নিয়োগ দেয়ার বিরল নজির সৃষ্টি করে দেশের জনগণকে বছরের পর বছর  মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়নের সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে রেখেছে।  এদিকে গবেষণাগারে কর্মরত কর্মকর্তাদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে অসন্তোষ রয়েছে। তাঁরা একটি বৈষম্যমুক্ত সুন্দর কর্মপরিবেশ চায়, যাতে তাঁরা কৃষি ও কৃষকের সেবায় আত্বনিয়োগ করতে পারে। 

প্রতিষ্ঠানটিকে একটি নিয়োগবিধিতে আনতে জনপ্রশাসন ও কৃষি মন্ত্রণালয় নির্দেশ প্রদান করে। যার প্রেক্ষিতে ২০১২ সালে ক্যাডার অংশ থেকে উচ্চ আদালতে একটি  মামলা করা হয়। সম্প্রতি উচ্চ আদালত প্রতিষ্ঠানটিকে বিশেষ বিধানের মাধ্যমে ৮৯ জন প্রথম শ্রেণীর নন-ক্যাডার কর্মকর্তাকে এনক্যাডারমেন্ট এর মাধ্যমে বিসিএস (কৃষি) ক্যাডার করার নির্দেশনা দিয়ে মামলাটির রায় প্রকাশ হলেও তা বাস্তবায়নে গড়িমসি শুরু করেছে এখনো বহালদবিয়তে থাকা সৈরাচারি হাসিনার দোসর প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান ডিজি জালাল উদ্দীন।

কৃষি ও কৃষক পর্যায়ে মৃত্তিকা সেবা সম্পর্কিত সরাসরি জনগণের সাথে সম্পৃক্ত অংশের (গবেষণাগার) কর্মকর্তারা কৃষি মন্ত্রণালয় এবং মহাপরিচালকের কাছে দফায় দফায় স্মারকলিপি প্রদান করেও কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না। এর প্রেক্ষিতে গত ২৩/০৯/২০২৪ খ্রিঃ তারিখে এনক্যাডারমেন্ট বাস্তবায়ন কমিটির পক্ষ থেকে কর্মকর্তারা ডিজির দপ্তরে আলোচনার জন্য যান। এসময় ডিজির দপ্তরের সংযুক্ত কর্মকর্তা মেহেদী হাসান ও অবৈধভাবে উপপরিচালক (প্রশাসন)  পদে বসা ( নিয়োগবিধিতে উপপরিচালক পদ নেই) শরিফুল ইসলামের নের্তৃত্বে সিসিটিভি বন্ধ করে কর্মচারি দিয়ে কর্মকর্তাদের উপর হামলা চেষ্টা ও নারী কর্মকর্তাদের লাঞ্ছিত ও ভীত সন্তস্ত্র করা হয়। 

এর কোন প্রতিকার না পেয়ে গবেষণাগারের কর্মকর্তারা অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি পালন করছে এবং আজ ২৯-০৯-২০২৪ খ্রিঃ তারিখে এক মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচী পালিত করে। এসময় বক্তারা অবিলম্বে কর্মকর্তাদের  উপর হামলা ও লাঞ্ছিত করার  দ্রুত বিচার দাবি, মহামান্য আদালতের রায় দ্রুত বাস্তবায়ন এবং এর সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। এসময় তাঁরা আরও বলেন মহামান্য আদালতের রায় বাস্তবায়ন করে প্রতিষ্ঠানকে একই নিয়োগবিধির আওতায় আনতে হবে অথবা বিসিএস ইকোনমিক ক্যাডার যেমন প্রশাসন ক্যাডারে মার্জ হয়েছে তেমন ক্যাডার অংশটিকে বিসিএস কৃষি সম্প্রসারণের সাথে মার্জ করে শুধু নন-ক্যাডার পরিচালিত প্রতিষ্ঠান করতে হবে।