কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সেক্টরে যুবসমাজকে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলার আহ্বান
দেশের কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সেক্টরে যুবসমাজকে আরও সম্পৃক্ত করার তাগিদ দিয়েছেন এনজিওবুরো এফেয়ার্স এর মহাপরিচালক (গ্রেড-১) জনাব সাইদুর রহমান। তিনি বলেছেন, এ সেক্টরগুলোতে উদ্যোক্তা হওয়ার সম্ভাবনা ও সুযোগ সবচেয়ে বেশি। আধুনিক ও উদ্ভাবনী প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে এ খাতকে এগিয়ে নিয়ে যেতে দেশের যুবসমাজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। কাজেই, চাকরির পেছনে না ছুটে যুবসমাজকে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।
সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর আদাবরে উদ্দীপন কনভেনশন হলে বাংলাদেশ কৃষি সম্প্রসারণ নেটওয়ার্ক (BAEN) আয়োজিত "Last Mile Program (LMP) Learning Sharing and Engaging RAS Stakeholders" শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বেচ্ছাসেবার প্রভাব:
প্রধান অতিথি সাইদুর রহমান আরও বলেন, বেতনভুক্ত কর্মচারীদের তুলনায় স্বেচ্ছাসেবকদের কাজ করার প্রবণতা অনেক বেশি। BAEN-এর কার্যক্রম এই ক্ষেত্রে অত্যন্ত প্রশংসনীয়। তিনি BAEN-এর ভবিষ্যৎ কার্যক্রমগুলোকে আরও প্রসারিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
কৃষি খাতের বিবর্তন ও প্রযুক্তির ব্যবহার:
কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন ড. মো. হামিদুর রহমান, প্রাক্তন মহাপরিচালক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। তিনি বলেন, কৃষির বিবর্তনের সাথে এর কাজের ধরণও বদলেছে, তাই মাঠ পর্যায়ে ডিজিটাল টুলের ব্যবহার অপরিহার্য। তিনি BAEN-এর ভবিষ্যৎ কার্যক্রমকে একটি স্থায়ী প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেখতে চান বলে মত দেন।
BAEN-এর লক্ষ্য ও অগ্রগতি:
কৃষিবিদ আফজাল হোসেন ভূঁইয়ার পরিচালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক ড. এ বি এম খালেদুজ্জামান এবং BAEN-এর সাধারণ সম্পাদক ড. মো. সেকেন্দার আলী। তারা বলেন, BAEN ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে যাত্রা শুরু করে এবং এর লক্ষ্য কৃষি খাতে উদ্ভাবনী পদ্ধতি এবং দক্ষতা উন্নয়ন।
কৃষিবিদ আফজাল হোসেন জানান, BAEN এখন পর্যন্ত চারটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে এবং সরকারি ও বেসরকারি খাতের মধ্যে সমন্বয় করে কাজ করছে।
কৃষি সম্প্রসারণের গুরুত্ব:
ড. সেকেন্দার আলী বলেন, কৃষির উদ্ভাবনগুলো মাঠ পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়ার গুরুত্ব অপরিসীম। তিনি জানান, BAEN ইতিমধ্যে ১০,০০০ কৃষকের কাছে পৌঁছাতে পেরেছে।
প্রাণিসম্পদ খাতের অগ্রগতি:
ড. এ বি এম খালেদুজ্জামান বলেন, অ্যানিম্যাল সেক্টরে বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কৃষকের কাছে নতুন উদ্ভাবন পৌঁছে দেওয়ার কাজে সফল হয়েছে।
গ্রামীণ কৃষি সেবা:
কনসালট্যান্ট হেদায়েত উল্লা প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে জানান, BAEN এর মাধ্যমে ২০ লাখ মানুষের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে, যার ৪৬ শতাংশ নারী ও যুবক।
প্রয়োজনীয়তা ও ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা:
বক্তারা ফুড চেইনে অর্গানিক উপাদান এবং Good Agriculture Practice (GAP) এর উপর গুরুত্বারোপ করেন।
এছাড়া প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আদর্শ প্রাণীসেবা এর কৃষিবিদ ড. রেজাউল আলম রেজা এবং অষ্টগ্রাম চিজের উপর প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. আশিকুল ইসলাম।
কর্মশালায় প্রায় ৮০ জন প্রতিনিধি অংশ নেন, যাদের মধ্যে ছিলেন গবেষক, কৃষিবিদ, বেসরকারি কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন এনজিওর প্রতিনিধি।