ঢাকা, ১৮ জুলাই ২০২৫, শুক্রবার

কৃষিজমি দখলে সরকারি প্রতিষ্ঠানও পিছিয়ে নেই



কৃষি

এগ্রিবার্তা ডেস্ক

(৮ মাস আগে) ২৯ অক্টোবর ২০২৪, মঙ্গলবার, ১১:১৩ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ৯:০৩ অপরাহ্ন

agribarta

বরগুনার বেতাগী উপজেলায় কৃষিজমি দখল ও নির্মাণের প্রবণতা উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। সরকারি অনুমতি ছাড়া দেড় একর জমি ভরাট করে নির্মিত হয়েছে একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং যন্ত্রপাতি সংরক্ষণাগার। বিস্তীর্ণ এলাকায় বালু ফেলে কৃষিজমি ধ্বংস করা হচ্ছে, যা শস্যভান্ডারখ্যাত বিষখালী নদীর পাড়ের এই উপজেলার চিত্র পাল্টে দিচ্ছে।

কিছুদিন আগে পর্যন্ত বেতাগী পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডে কৃষি বিভাগের এই জমিতে বিভিন্ন মৌসুমে ফসল আবাদ হতো। বর্তমানে, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ক্ষুদ্র চাষিদের জন্য কৃষি সহায়ক প্রকল্পের আওতায় আধুনিক কৃষি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং যন্ত্রপাতি সংরক্ষণাগার নির্মাণ করা হয়েছে। এই স্থাপনাগুলোর আশপাশেও বালু ফেলে ভরাট করা হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা জানান, কৃষিজমির ব্যবহার নিয়ে সরকারি অনুমতি নেওয়ার নিয়ম থাকলেও কৃষি বিভাগই তা মানছে না। বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থায়নে কৃষিজমির ওপর ভবন, ক্ষুদ্র শিল্পকারখানা এবং রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে। এমনকি সুফলভোগীদের না জানিয়ে লিজ দেওয়া জমিতেও স্থাপনা নির্মাণ হচ্ছে, ফলে চাষিরা বিপদে পড়ছেন।

বেতাগী পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কৃষক মতিয়ার রহমান বলেন, “আমাদের জমি অধিগ্রহণ হলেও সেখানে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে। আমরা জানতাম না।” সরেজমিনে দেখা গেছে, এখানে দু’ফসলি এমনকি তিন ফসলি জমিও রয়েছে, কিন্তু কৃষিজমির সংকট দেখা দিয়েছে।

কৃষি অফিস সূত্র জানায়, উপজেলায় মোট কৃষিজমির পরিমাণ ১২ হাজার ৬৯৭ হেক্টর। পৌর এলাকার উন্নয়নমূলক কাজের ফলে জমির পরিমাণ কমছে, যা খাদ্য নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজনের উপজেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মহসিন খান বলেন, “যাদের কৃষিজমি সুরক্ষার কথা তারা নিজেদের উদ্যোগে এই স্থাপনা নির্মাণ করছেন। এভাবে চলতে থাকলে খাদ্য সংকট ও পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে।”

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তানজিলা বেগম জানান, সরকারি প্রয়োজনেই কৃষিজমিতে স্থাপনা করা হয়েছে এবং অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে তিনি নিশ্চিত নন। সাবেক উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক আমিনা বেগম বলেন, “অপরিকল্পিত শিল্পায়নের ফলে কৃষিজমির ওপর চাপ বাড়ছে।”

বেতাগী পৌরসভার প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারুক আহমদ বলেন, “কৃষিজমিতে স্থাপনা নির্মাণের বিষয়ে কেউ অনুমতি নেয়নি। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”