
মো. শরীফ হোসাইন কাকন, যিনি ইতিহাসে অনার্স ও মাস্টার্স পাস করেছেন, চাকরির খোঁজে সময় নষ্ট না করে কৃষিতে মনোনিবেশ করেছেন এবং স্বল্প সময়ে সফলতা অর্জন করেছেন। চলতি বছর তিনি পাঁচ একর জমিতে পেঁপে বাগান করে ১৫ লাখ টাকা লাভের আশা করছেন।
ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার ডাকাতিয়া ইউনিয়নের সোনাখালী গ্রামের মো. মজিবর রহমানের ছেলে শরীফ ২০১৬ সালে তিতুমীর কলেজ থেকে ইতিহাসে অনার্স এবং ২০১৭ সালে ময়মনসিংহ আনন্দ মোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। লেখাপড়া শেষে চাকরি খোঁজার জন্য দুই বছর বিভিন্ন স্থানে ইন্টারভিউ দেন, কিন্তু চাকরি জোটেনি। এরপর তিনি উদ্যোক্তা হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন এবং কৃষিতে সাফল্য অর্জনের লক্ষ্যে কাজ শুরু করেন।
২০১৯ সালে বাবার দুই একর জমির এক একরে টপলেডি জাতের পেঁপে চাষ শুরু করেন। চলতি মৌসুমে তিনি পাঁচ একর জমিতে তিন হাজার ৮০০ পেঁপের চারা রোপণ করেছেন। বর্তমানে গাছগুলোতে পেঁপে ধরেছে এবং সেগুলো বড় হচ্ছে। জমি চাষ, বীজ ক্রয়, চারা তৈরি, রোপণ, পরিচর্যা, সার-কীটনাশক প্রয়োগসহ বিভিন্ন কাজে তিনি এ পর্যন্ত প্রায় ৯ লাখ টাকা খরচ করেছেন। ফলন ওঠার পর আরো এক থেকে দেড় লাখ টাকা খরচ হতে পারে।
সঠিক সময়ে বৃষ্টি হওয়ায় এ বছর ফলন ভালো হয়েছে। কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবং পেঁপের বাজার ভালো থাকলে তিনি পাঁচ একরের পেঁপে বাগান থেকে ১৫ লাখ টাকা লাভের আশা করছেন। কাকনের স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিলোসফিতে অনার্স ও মাস্টার্স করেছেন এবং স্বামীর কৃষিকাজে সবসময় সহযোগিতা ও উৎসাহ দেন।
এখন কাকন ও সাবিনা দম্পতি এলাকার শিক্ষিত বেকার যুবকদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে উঠেছেন। তাঁদের পেঁপে বাগান দেখে অনেক বেকার যুবকও পেঁপে চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা মিজনুর রহমান খান জানান, পেঁপে একটি লাভজনক ফসল এবং ভালুকার চাষিরা এখন পেঁপে চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।