ঢাকা, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, সোমবার

স্থানীয়দের জমি জবরদখল করছে আওয়ামী লীগ নেতা



জাতীয়

এগ্রিবার্তা ডেস্ক

(৩ মাস আগে) ২ নভেম্বর ২০২৪, শনিবার, ১২:৩৩ অপরাহ্ন

agribarta

ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার সিংরইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে তিনি দলের প্রভাব খাটিয়ে অন্যের জমি ও সরকারি খাল দখল করে পুকুর খনন, খামার নির্মাণ এবং অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সাইফুল ইসলাম ‘বালুখোর’ নামে পরিচিত এবং তার হাত থেকে গ্রামের নিরীহ মানুষ ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকজনও রক্ষা পাচ্ছেন না। তিনি তাদের জমি জবরদখল করে বিশাল মাছের ফিসারি গড়ে তুলেছেন।

স্থানীয় প্রশাসন এবং ভূমি অফিস অভিযোগের সত্যতা পেলেও রাজনৈতিক ছত্রছায়ার কারণে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি বলে অভিযোগ করেছে স্থানীয়রা। তবে উপজেলা প্রশাসন শিগগিরই অভিযানের মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে। একাধিক সূত্রে জানা গেছে, চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে যে তিনি সরকারি জায়গা এবং খাল অবৈধভাবে দখল করে পুকুর খনন করেছেন, যেখানে মাছ চাষ এবং মুরগির খামারও তৈরি করেছেন। সরেজমিনে গিয়ে এসব তথ্যের সত্যতা পাওয়া গেছে।

এদিকে, খাল ভরাট করায় বর্ষাকালে পানি প্রবাহে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে, ফলে শুষ্ক মৌসুমে কৃষকদের ফসল বিনষ্ট হচ্ছে এবং বর্ষাকালে ফসল ডুবে লোকসানের শিকার হচ্ছেন তারা। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ভয়ের কারণে কেউ তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে পারছেন না।

চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে নিয়ম বহির্ভূতভাবে ড্রেজারের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছেন। ভারী ট্রাক্টরের মাধ্যমে বালু পরিবহনের ফলে স্থানীয় রাস্তাঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং মানুষের বাড়িঘর ও পার্শ্ববর্তী জমি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রতিবেশী জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না থাকলেও সাইফুলের ক্ষমতা কমেনি এবং তিনি এখনও জবরদখল অব্যাহত রেখেছেন। যারা তার বিরুদ্ধে কথা বলতে চায়, তাদেরকে নানাভাবে হয়রানি করা হয়।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলামের দাবি, সরকারি জায়গা ও খাল দখল করে পুকুর খননের অভিযোগ মিথ্যা। তিনি বলেন, এসব জমি তার পৈতৃক সম্পত্তি। সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও নিরীহ মানুষের জমি দখলের অভিযোগের বিষয়ে তিনি জানান, পূর্বে তদন্ত হলেও কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফয়জুর রহমান জানিয়েছেন, চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে সরকারি জায়গায় মাছের খামার নির্মাণের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে এবং তারা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অরুণ কৃষ্ণ পাল বলেন, যদি অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বা সরকারি জায়গা দখল করে পুকুর নির্মাণ হয়ে থাকে, তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।