নেত্রকোনার খালিয়াজুরী উপজেলার ধনু নদীর পানি প্রতিনিয়ত হু হু করে বাড়ছে। পানি বাড়তে থাকায় হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধে চাপ পড়ছে। এতে ঝুঁকির মুখে কীর্তনখোলাসহ হাওরের বিভিন্ন ফসল রক্ষা বাঁধ। তবে এখনো কোনো বাঁধ ভেঙে ফসলহানির ঘটনা ঘটেনি। আজ সোমবার সকাল পর্যন্ত নদের খালিয়াজুরী পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ২২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। ওই পয়েন্টে পানির বিপদসীমা ৪ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার।
স্থানীয়রা জানান, ধনু নদের তীরে অবস্থিত কীর্তনখোলাসহ হাওরের বিভিন্ন ফসল রক্ষা বাঁধ ঝুঁকিতে পড়েছে। ফোল্ডা-২-এর আওতায় ৫৫ কিলোমিটার ওই বাঁধের ৭ কিলোমিটার অংশে কিছু দূর পরপর ফাটল ও ধস দেখা দিচ্ছে। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড,জেলা প্রশাসন,উপজেলা প্রশাসন, জনপ্রতিনিধিরা স্থানীয় কৃষকর ও শ্রমিকদের নিয়ে সার্বক্ষণিকভাবে মেরামতের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। গতকাল রোববার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে বাঁধের একটি অংশে হঠাৎ করে বড় ধরনের ধসের ঘটনা ঘটেছে। তাৎক্ষণিকভাবে শতাধিক শ্রমিক নিয়ে বাঁশ, কাঠ, চাটাই, খড়, মাটি, বালু ও জিও ব্যাগ ফেলে বাঁধ রক্ষা করা হয়েছে।
নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এম এল সৈকত জানান,ধনু নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ২২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি-বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় কীর্তনখোলা, গোমাইল ও চরহাইসদা বাঁধ ঝুঁকির মুখে। জেলায় বাঁধ ভেঙে এখন পর্যন্ত কৃষকের কোনো ক্ষতি হয়নি। আশা করি কৃষকরা তাদের হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রমের ফসল ঘরে তুলতে পারবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক এফ এম মোবারক আলী জানান, বন্যার হাত থেকে বাঁচতে ৮০ ভাগ ধান পাকলেই কেটে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। মদন, মোহনগঞ্জ ও খালিয়াজুরী হাওর উপজেলায় এপর্যন্ত হাওরে ৭০ ভাগ ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে।
পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সি বলেন, হাওরের বাঁধ রক্ষায় পুলিশের পক্ষ থেকে প্রতি থানায় ৫ সদস্যের টিম গঠন করা হয়েছে। তারা দিনরাত বাঁধ পাহারায় তদারকি করছে।
খালিয়াজুরী হাওরের বাঁধ এলাকা পরিদর্শন করে জেলা প্রশাসক কাজি মো. আবদুর রহমান বলেন,সরকার হাওরের ফসল রক্ষায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে। হাওরের বাঁধের যেন কোন ক্ষতি না হয় সেজন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা নিয়মিত তদারকি করছে।