
আজ বিশ্ব ডিম্ দিবস। এবারের প্রতিপাদ্যঃ 'সুস্থ মেধাবী জাতি চাই, প্রতিদিনই ডিম খাই।'
ডিমকে বিশ্বে একটি উন্নতমানের ও সহজলভ্য আমিষজাতীয় খাদ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল এগ কমিশন (আইইসি) স্থাপিত হয় ১৯৬৪ সালে। বর্তমানে এই সংস্থার সদস্যসংখ্যা ৮০। সংস্থাটি প্রাণিজ আমিষের চাহদিা পূরণ, স্বাস্থ্যবান ও মেধাবী জাতি গঠন এবং সর্বোপরি ডিমের গুণাগুণ সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে ১৯৯৬ সালে অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় প্রথম ‘বিশ্ব ডিম দিবস’ পালনের আয়োজন করে, যা পরবর্তী সময়ে প্রতিবছর অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় শুক্রবার পালিত হয়ে আসছে।
২০১৩ সালে বাংলাদেশ অ্যানিমেল অ্যাগ্রিকালচার সোসাইটি (বিএএএস) ইন্টারন্যাশনাল এগ কমিশনের বাংলাদেশ প্রতিনিধি হিসেবে নিযুক্ত হয়। একই বছরের ১১ অক্টোবর বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো পালন করা হয় ‘বিশ্ব ডিম দিবস’, যা ছিল ১৮তম বিশ্ব ডিম দিবস। এই বছর ১১ অক্টোবর বিশ্ব ডিম দিবস পালিত হবে। ডিম দিবসে প্রানিসম্পদ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালা আয়োজন করেছে। যেমন স্কুল ক্যাম্পেইন, র্যালী, আলোচনা সভা, লিফলেট বিতরন ইত্যাদি।
ডিম একটি পুষ্টিকর খাদ্য। আগে ধারণা করা হতো, বেশি ডিম খাওয়া ভালো না। কারণ ডিমে থাকে অনেক কোলেস্টেরল, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। কিন্তু সম্প্রতি এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ডিমে যে চর্বি থাকে, তার তিন-চতুর্থাংশই হচ্ছে হার্ট ও রক্তনালির জন্য উপকারী অসম্পৃক্ত চর্বি।
সম্পুর্ণ সিদ্ধ করা আস্ত মুরগীর ডিমে প্রতি ১০০ গ্রাম (৩.৫ আউন্স) পুষ্টিগত মান-
শক্তি -৬৪৭ কিজু (১৫৫ kcal)
শর্করা- 1.12 g
স্নেহ পদার্থ- 10.6 g
প্রোটিন-12.6 g
ভিটামিনসমূহ
ভিটামিন এ সমতুল্য- (18%)140 μg
থায়ামিন (বি১)-(6%)0.066 mg
রিবোফ্লাভিন (বি২)-(42%)0.5 mg
প্যানটোথেনিক অ্যাসিড (বি৫)- (28%)1.4 mg
ফোলেট (বি৯)-(11%)44 μg
চিহ্ন ধাতুসমুহ
ক্যালসিয়াম-(5%)50 mg
লোহা- (9%)1.2 mg
ম্যাগনেসিয়াম-(3%)10 mg
ফসফরাস- (25%)172 mg
পটাশিয়াম- (3%)126 mg
দস্তা- (11%)1.0 mg
অন্যান্য উপাদানসমূহ
পানি-75 g
Choline-225 mg
Cholesterol-424 mg
ডিম প্রোটিনে ভরপুর একটি খাবার। অনেকে যদিও ডিম নিয়ে বিভিন্ন চিন্তায় পড়ে থাকে। তবুও ডিম অত্যন্ত কম দামের পুষ্টিকর খাবার হিসেবে পরিচিত। সহজলভ্য পুষ্টির উৎস হিসেবে ডিমের তুলনা কেবল ডিমই হতে পারে। আর ডিমে রয়েছে বেশ কিছু পুষ্টি উপাদান, যা দেহের ক্যালরি সরবরাহ থেকে শুরু করে নানা খাদ্যপ্রাণও সরবরাহ করে। তাই বাড়িতে বা রেস্তোরাঁয় সকাল-বিকেলের নাশতাতেই হোক কিংবা দুপুর-রাতের খাবারে ডিমের একটা মেন্যু ঘুরেফিরে আসেই। আর ব্যাচেলরদের জীবনে সহজে রান্নার সহজ মেন্যু হিসেবে ডিম তো প্রায় ‘জাতীয় খাদ্য’ই বটে! তো দেখা যাক ছোট একটা ডিমে কি কি গুনাগুন বিদ্যমান আছে।
ডিমের ১৫ টি উপকারিতা তুলে দেখানো হল
১। হৃদরোগের সম্ভাবনা কমায়
এলডিএল কোলস্টেরলকে মন্দ কোলস্টেরল হিসেবে বলা হয়। এটি ডিম খেলে কমে যায়। তাই ডিম খাওয়ায় হৃদরোগের সম্ভাবনা বাড়ে না বরং কমে যায়।
২। দেহের ভালো কোলস্টেরল বাড়ায়
দেহের উচ্চমাত্রায় কোলস্টেরল ক্ষতি করে এমনটা অনেকেই জানি। কিন্তু কোলস্টেরলের রয়েছে ভালো ও মন্দ। মূলত মন্দ কোলস্টেরল দেহের ক্ষতি করে। আপনি যদি ভালো কোলস্টেরল গ্রহণ করেন তাহলে তা দেহের ক্ষতি করবে না। ডিমে রয়েছে এ ভালো কোলস্টেরল। এটি দেহের মন্দ কোলস্টেরল দূর করতেও সহায়ক। এ কারণে নিয়মিত ডিম খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন গবেষকরা।
৩। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
ডিম দেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়তা করে। আপনি যদি দেহের জীবাণুগুলো দূর করতে চান, ভাইরাস ও বিভিন্ন রোগের জীবাণুকে শায়েস্তা করতে চান তাহলে নিয়মিত ডিম খান। একটি বড় ডিমে রয়েছে প্রায় ২২ শতাংশ আরডিএ বা সেলেনিয়াম। এটি শিশুদের পুষ্টি চাহিদা মেটাতেও বিশেষভাবে কার্যকর, যা তাদের বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধক্ষমতা অর্জনে সহায়তা করে।
৪। উদ্যম শক্তি যোগায়
একটি ডিমে রয়েছে দৈনিক চাহিদা পূরণের উপযোগী ১৫ শতাংশ ভিটামিন বি। এটি দৈনিক খেলে দেহের ভিটামিন বি-র চাহিদা মেটাতে ভূমিকা রাখে। ভিটামিন বি দেহে এনার্জি যোগায়। এ কারণে উদ্যমের প্রয়োজনে ডিম খাওয়ার তুলনা হয় না।
৫। ত্বক ও চুলের উন্নতি
ভিটামিন বি কমপ্লেক্স থাকায় ডিম সুস্থ চুল, ত্বক, চোখ ও লিভার গঠন করতে সহায়তা করে। এটি ছাড়াও ডিমে রয়েছে নানা ভিটামিন। এসব ভিটামিন দেহের নার্ভাস সিস্টেম উন্নত করে এবং মাংসপেশির উন্নয়ন ঘটায়।
৬। মস্তিষ্কের উন্নতি
ডিম মস্তিষ্কের প্রচুর উন্নতি ঘটায়। এতে রয়েছে মস্তিষ্কের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান, যার নাম কোলিন। গবেষণায় দেখা গেছে, কোলিনের অভাবে মস্তিষ্কের নানা সমস্যা দেখা দেয়। বহু মানুষই ডিম না খাওয়ায় প্রয়োজনীয় এ উপাদানটির অভাবে ভোগেন।
৭। অ্যামাইনো অ্যাসিড
মানুষের দেহ ১১ ধরনের প্রয়োজনীয় অ্যামাইনো অ্যাসিড বানাতে পারে। এটি জীবনধারণের জন্য অতি প্রয়োজনীয় ভূমিকা রাখতে পারে। মানুষের দেহে ২০ ধরনের অ্যামাইনো অ্যাসিড প্রয়োজন হয়। দেহ তার মধ্যে ১১ ধরনের বানাতে পারলেও বাকি ৯ ধরনের অ্যামাইনো অ্যাসিডের সহজ উপায় হলো ডিম খাওয়া।
৮। মানসিক চাপ ও উদ্বেগ কমায়
ডিম মানসিক চাপ ও উদ্বেগ কমাতে ভূমিকা রাখে। এটি মানুষের মনের ওপর প্রভাব ফেলে। ২০০৪ সালের এক গবেষণায় ডিমের এ অসাধারণ উপকার সম্পর্কে জানা যায়।
৯। অ্যান্টি অক্সিডেন্ট বিদ্যমান
ডিমে দুটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়অ যায়। এগুলোর নাম হলো লুটেইন ও জিয়াজাথিন। এগুলো চোখ বাঁচাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ডিমের কুসুমে এ উপাদানগুলো পাওয়া যায়। তাই ডিমের কুসুমসহ ডিম খাওয়াই ভালো।
১০। হাড় ও দাঁত মজবুত করা
ডিমের উপাদান আপনার হাড় ও দাঁত মজবুত করতে সহায়তা করে। ডিম প্রাকৃতিক ভিটামিন ডি-এর উৎস। এটি ক্যালসিয়াম গ্রহণ করতে সহায়তা করে। আর এতেই সুস্থ হাড় ও দাঁত নিশ্চিত করা সম্ভব হয়।
১১। পূর্ণতার অনুভূতি
পেট ভরে খাওয়া হলেও আমাদের ক্ষুধা লাগতে পারে। আর এতে বাড়তি খাবার খেয়ে দেহের ওজন বেড়ে যেতে পারে। ডিমের উপাদানগুলো আপনাকে খাওয়ার পর পেটে পূর্ণতার অনুভূতি দেবে। এতে বাড়তি খাওয়ার ক্ষুধা কমে যায়।
১২। দেহের ওজন নিয়ন্ত্রণে
ডিম খেলে দেহের ওজন কমে একথা অনেকেই বিশ্বাস করতে চান না। কিন্তু বিভিন্ন গবেষণায় বিষয়টি প্রমাণিত হয়েছে যে পরিমিত মাত্রায় ডিম খেলে দেহের ওজন কমানো সম্ভব। মূলত ডিমে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান থাকায় তা বাড়তি খাবার খাওয়ার চাহিদা কমিয়ে দেয়। এতে ক্ষুধা কমে যায় এবং দেহের ওজনও কমে যায়। সুতরাং ওজন কমাতে ডিমের অপরিসীম অবদান।
১৩। দৃষ্টি শক্তি বৃদ্ধিতে
ডিমে অবস্থিত লুটিন ও জেক্সান্থিন এই দুটি ক্যারটিনইয়েড আমাদের দৃষ্টি শক্তিকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। ডিমে থাকা উপাদানগুলো আমাদের চোখের ছানি, মেকুলার পতন ও সূর্যের বেগুনি রশ্নি থেকে আমাদের চোখকে রক্ষা করে থাকে।
১৪। ক্যালরি বৃদ্ধিতে
ছোট্টো একটা ডিম হাজারো ভিটামিনে ভরা। এর ভিটামিন বি ১২ আপনি যা খাচ্ছেন সেই খাবারকে এনার্জি বা শক্তিতে রূপান্তরিত করতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে প্রত্যেক নারীর শরীরে রোজ কমপক্ষে ৫০ গ্রাম প্রোটিনের দরকার। একটি ডিমে থাকে ৭০-৮৫ ক্যালোরি বা ৬.৫ গ্রাম প্রোটিন। সুতরাং সুস্থ থাকতে রোজ ডিম খেতেই পারেন।
১৫। ক্যানসার প্রতিরোধে
ডিমে আছে ভিটামিন ই। এটি কোষ এবং ত্বকে উত্পন্ন ফ্রি র্যাডিক্যাল নষ্ট করে দেয়। এবং স্কিন ক্যানসার প্রতিরোধ করে। বর্তমানে প্রায় মেয়েদের স্তনের ক্যানসার দেখা দিচ্ছে, ডিমে প্রচুর ভিটামিন বিদ্যমান থাকাই সপ্তাহে যদি ৬টি ডিম আপনি খাইতে পারেন। আপনাকে স্তনের ক্যানসার নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। কারন ডিম ৪০% পর্যন্ত স্তনের ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে থাকে।
একসময় যে বলা হতো বেশি ডিম খাওয়া শরীরের জন্য ক্ষতিকর, বিজ্ঞানীরা এখন সে মতবাদ পাল্টে ফেলেছেন।চীনে প্রায় ৫ লাখ লোকের ওপর এক গবেষণা চালিয়ে বিজ্ঞানীরা বলছেন, প্রতিদিন একটা করে ডিম খেলে হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডিম থেকে শারীরিক উপকার পেতে হলে স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপন করতে হবে।
''পুষ্টি সংক্রান্ত নানা গবেষণায় অনেক সময়ই কিছু না কিছু ফাঁক থেকে যায়, কিন্তু চীনে বড় এই সমীক্ষার ওপর ভিত্তি করে চালানো গবেষণা থেকে অন্তত একটা বিষয় পরিস্কার যে প্রতিদিন একটা ডিম খেলে তার থেকে হৃদযন্ত্র বা শরীরের রক্ত সঞ্চালনে কোন ঝুঁকি তৈরি হয়না, বরং প্রতিদিন একটা ডিম স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হতে পারে'' - বলছেন ইংল্যাণ্ডে কেম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নিটা ফরুহি।
বহুদিন পর্যন্ত ডিমকে ''শরীরের শত্রু'' বলে প্রচার করা হয়েছে। ডিম স্যালমোনেলা জীবাণুর উৎস, ডিম শরীরে কোলেস্টেরল বাড়িয়ে দেয়- এমন খবর সংবাদমাধ্যমে প্রায়ই এসেছে। কাজেই এখন ডিম নিয়ে বিজ্ঞানীদের মতবাদ পাল্টে যাচ্ছে কেন? কটা ডিম শরীরের জন্য ভাল ?
এখন বেশিরভাগ ডাক্তারই স্বাস্থ্যকর খাবারের তালিকায় ডিম রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন। তারা বলছেন, বেশিরভাগ পুষ্টিকর উপাদান প্রাকৃতিকভাবে যেসব খাবারে সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় তার মধ্যে অন্যতম হল ডিম। যেমন, ডিমে আছে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন, ভিটামিন এ, ডি, বি এবং বি-টুয়েলভ্। এছাড়াও ডিমে আছে লুটেইন ও যিয়াক্সজেনথিন নাম দুটি প্রয়োজনীয় উপাদান যা বৃদ্ধ বয়সে চোখের ক্ষতি ঠেকাতে সাহায্য করে।
ব্রিটিশ ডায়েটিক অ্যাসোসিয়েশনের ড: ফ্র্যাঙ্কি ফিলিপস্ বলছেন, ''দিনে একটা - এমনকি দুটো ডিমও স্বাস্থ্যের জন্য ভাল।''''বেশি ডিম খাওয়ায় ভয়ের কোন কারণ নেই।''ড: ফিলিপস্ বলছেন, এখানে সতর্কবাণী শুধু একটাই - ''একধরনের খাবার বেশি খেতে গিয়ে অন্য খাবারে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় যেসব পুষ্টি রয়েছে সেগুলো বাদ দেওয়া ভুল হবে।''
তিনি আরও বলছেন, ডিম যদিও ''প্রোটিনের গুরুত্বপূর্ণ একটা উৎস'', কিন্তু একটা ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, আমাদের অন্যান্য খাবার থেকেও আমরা প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন পাই - যা অনেক সময়ই শরীরের জন্য দৈনন্দিন প্রয়োজনের তুলনায় দুই থেকে তিনগুণ বেশি। কাজেই ''অতিরিক্ত প্রোটিন কিডনির জন্য চাপ সৃষ্টি করতে পারে''।
২০০৭ সালে ব্রিটিশ হার্ট ফাউণ্ডেশন নামে একটি সংস্থা বলছে, কোলেস্টেরল বিষয়ে নতুন যেসব তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গেছে তার আলোকে সপ্তাহে তিনটির বেশি ডিম না খাওয়ার যে পরামর্শ তারা ২০০৭ সালে দিয়েছিল তা তারা তুলে নিচ্ছে। সন্দেহাতীতভাবে পুষ্টিকর প্রমাণিত হওয়া সত্ত্বেও এই ডিম নিয়ে অনেক কুসংস্কার রয়েছে। তেমনি একটি ভ্রান্ত ধারণা প্রচলিত রয়েছে ফার্মের ডিম নিয়ে।
অনেকেই মনে করেন, ফার্মের ডিম খেলে দেহের ক্ষতি হবে। দেশি ডিমই তাঁদের পছন্দ। কিন্তু বাস্তবে ঘটনাটি একেবারেই উল্টো। ফার্মে হাঁস-মুরগির বিজ্ঞানসম্মত রক্ষণাবেক্ষণ হয় বলে এদের ডিমের পুষ্টিমূল্য অনেক বেশি, দামেও কম। এদের কুসুমের রং ফ্যাকাসে। কারণ, ফার্মের হাঁস-মুরগিকে সরাসরি ভিটামিন এ খাওয়ানো হয়। অন্যদিকে দেশি মুরগিরা যেসব শস্যদানা ও শাকসবজি খুঁটে খায়, তা থেকে ভিটামিন এ’র প্রাক অবস্থা, অর্থাৎ ক্যারোটিন তারা পায়। এই ক্যারোটিন টকটকে লালাভ হলুদ রঙের। এই ক্যারোটিন লিভারে গিয়ে ভিটামিন এ-তে পরিণত হয়।
কিন্তু অধিকাংশ লোকই কুসুমের লালাভ হলুদ রং দেখেই দেশি ডিম পছন্দ করেন এবং পুষ্টিকর মনে করেন। প্রকৃতপক্ষে দেশি ডিম ততটা পুষ্টিকর নয়। দেশি ডিমের চেয়ে ফার্মের ডিমই বেশি পুষ্টিকর। হতে পারে দেশি ডিম খেতে সুস্বাদু। ফার্মের ডিম ফ্যাকাসে রঙের বলে ভালো নয় আর দেশি ডিম বেশি ভালো—এ ধারণা পুরোপুরি ভুল। শিশুদের স্বাস্থ্য গঠন ও মেধা বিকাশে ডিম অনন্য, তাই বাচ্চাদের স্কুলের টিফিনে ডিমের রুচিকর রান্না হতে পারে ফাস্ট ফুডের চমৎকার বিকল্প। ডিমের কোলেস্টেরল উপকারী বিধায় সব বয়সের মানুষের জন্য ডিম উপযোগী।
তাই আসুন সবাই ডিম খাই প্রতিদিন।
ডাঃ মোঃ নূরে আলম
ভেটেরিনারি সার্জন
উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতাল, সদর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
nurealamdr@gmail.com