
বাংলাদেশ ক্যান্সার সোসাইটি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০ সালে প্রকাশিত এক গবেষণা তথ্যে দেখা যায় যে, ২০১৮ সালে তামাক ব্যবহারজনিত কারণে বাংলাদেশে এক লাখ ২৬ হাজার মানুষের মৃত্যু ঘটেছিল, যা ওই বছরের মোট মৃত্যুর সংখ্যার ১৩.৫ শতাংশ। ওই গবেষণায় আরো দেখা যায়, ওই সময়কালে ১৫ লাখ মানুষ তামাক ব্যবহারজনিত কারণে সৃষ্ট রোগে ভুগছিল আর ৬১ হাজার শিশু তাদের আশপাশের মানুষের সিগারেটের ধোঁয়ায় অসুস্থ হয়ে ভুগিয়েছিল। তামাক ব্যবহারজনিত মৃত্যু ও রোগ-ভোগের কারণে ২০১৮ সালে বাংলাদেশের ৩০ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছিল, যা জাতীয় মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের (জিডিপি) শতকরা ১.৪ ভাগ। তামাক সেবন করে মানুষ অসুস্থ হয়ে নিজের পরিবারকে ও দেশের অর্থনীতিকে ক্ষতি করে। গবেষণায় দেখা যায় যে, এক বছরে তামাক ব্যবহারজনিত কারণে রোগের চিকিৎসা বাবদ এ দেশের মানুষ মোট আট হাজার ৩৯০ কোটি টাকা খরচ করে, যার ৭৬ শতাংশ রোগীর পরিবার বহন করে এবং ২৪ শতাংশ খরচ সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগের বাজেট থেকে মেটানো হয়। তামাক সেবনজনিত কারণে সৃষ্ট রোগের চিকিৎসায় সরকার ২০১৮-১৯ অর্থবছরে তার স্বাস্থ্যবাজেটের ৯ শতাংশ খরচ করতে বাধ্য হয়। তামাক সেবন ক্যান্সার, হৃদরোগ, শ্বাসতন্ত্র সম্পর্কিত রোগসহ প্রায় সব ধরনের অসংক্রামক রোগের মূল কারণ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে, বাংলাদেশের মোট মৃত্যুর ৬৭ শতাংশ ঘটে থাকে অসংক্রামক রোগে। আর এ মৃত্যুর মিছিলকে দিন দিন বাড়িয়ে তুলছে মানুষের তামাক ব্যবহারের এই অভ্যাস। তামাক কোম্পানির দিন দিন তামাক সেবনকারী বাড়ানোর আগ্রাসী ভূমিকার কারণে এবং সিগারেটসহ অন্য সব তামাকপণ্যের সুন্দর সুন্দর বিজ্ঞাপন প্রচার করে তরুণ প্রজন্মকে আকৃষ্ট করায় মৃত্যু বাড়ছে। তামাক সেবনজনিত কারণে সৃষ্ট রোগে ভুগে বিংশ শতাব্দীতে ১০ কোটি মানুষ মারা গিয়েছিল, যা একবিংশ শতাব্দীতে এ কারণে মৃত্যু বেড়ে ১০০ কোটিতে গিয়ে দাঁড়াবে।
২০১৭ সালের গ্লোবাল অ্যাডাল্ট টোব্যাকো সার্ভের তথ্যে দেখা যাচ্ছে, এখনো বাংলাদেশের ১৫ বছর ও তার বেশি বয়সের মানুষদের ৩৫.৩ শতাংশ তামাকজাত দ্রব্য (সিগারেট-জর্দা-গুল ইত্যাদি) ব্যবহার করেন। এত বেশি মানুষের দ্বারা তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার এবং তামাকের কারণে এত বড় সংখ্যার মৃত্যু ও অর্থনৈতিক ক্ষতি ঠেকাতে এখনই প্রয়োজন জরুরি পদক্ষেপ। ২০০৫ সালে তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন ও প্রচারণা বন্ধ এবং পৃষ্ঠপোষকতা নিয়ন্ত্রণ করে আইন প্রণয়ন করা হয়েছে, কিন্তু তামাক পণ্য ব্যবহার দিন দিন বেড়েই চলেছে। যার ফলে সমগ্র জাতির সুস্বাস্থ্য রক্ষা করাটা এক ভয়াবহ ঝুঁকির সম্মুখীন। তামাকজাত দ্রব্য সেবনের এই ভয়াবহ ক্ষতির হাত থেকে জাতিকে রক্ষা করার জন্যই প্রধানমন্ত্রী ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে ‘তামাকমুক্ত’ করার ঘোষণা দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রীর এ ঘোষণাকে কার্যকর করার জন্য স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল (এনটিসিসি) সরকারি প্রতিষ্ঠান ও এনজিওদের কার্যক্রম সমন্বয় করে জোরালো পদক্ষেপ নিয়েছে। সেল এরই মধ্যে তামাক নিয়ন্ত্রণের জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রণীত কার্যকর তামাক নিয়ন্ত্রণ কৌশল বাস্তবায়ন করছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রস্তাবিত, তামাক নিয়ন্ত্রণের ছয়টি অত্যন্ত কার্যকর কৌশল হলো তামাকজাত পণ্য ব্যবহার মনিটরিং এবং এর ব্যবহার প্রতিরোধে নীতিমালা তৈরি করা; মানুষদের সিগারেটের ও তামাকের ধোঁয়া থেকে রক্ষা করা; তামাক ব্যবহার ছাড়ার উপায় বলা এবং সহায়তা করা; তামাক ব্যবহারের ভয়াবহতা ও ঝুঁকি সম্পর্কে সবাইকে সতর্কবাণী পৌঁছানো; তামাক পণ্যের ব্যবহার বৃদ্ধির জন্য প্রচার-প্রচারণা-বিজ্ঞাপন-উৎসাহ দান বন্ধ করা এবং তামাক পণ্যের ওপর ক্রমবর্ধমান হারে করারোপ।
অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হলো- একটি কুচক্রী, দেশবিরোধী ও স্বার্থান্বেষী মহল ‘২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাকমুক্ত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লক্ষ্যমাত্রা’ যাতে অর্জিত না হয় সেই লক্ষ্যে সক্রিয় রয়েছে। উন্নয়নের অন্যতম প্রধান নির্দেশক হলো- ‘স্বাস্থ্য, সুস্থ শরীর ও সজীব মন’। তামাক সেবন ও তৎপরবর্তীকালে তামাকসেবীদের অনেকেই আরো ক্ষতিকর নেশার বস্তু যেমন- ইয়াবা, হেরোইন, ড্যান্ডি, আইস, গাঁজা, চরস, প্যাথেডিন ইনজেকশন ইত্যাদিতে জড়িয়ে পড়ছে। ফলে উন্নয়ন ও সুস্থ স্বাস্থ্যের অধিকারী একটি জাতি গঠনের যে স্বপ্ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেখছেন এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধু সোনার বাংলা গড়ার যে স্বপ্ন দেখেছেন, তা ভূলুণ্ঠিত হতে বসেছে এই তামাক শিল্প ও ব্যবসায়ীদের অসাধু তৎপরতার কারণে।
‘গ্রামবাংলা উন্নয়ন কমিটি’র সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, বরিশাল বিভাগের ১২টি শহরের ছয় হাজার ৮১৫টি তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয়ের দোকানে ২১ হাজার ৫০২টি সিগারেট-জর্দা-গুল ইত্যাদি এবং তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন সামগ্রী যেমন- স্টিকার, লিফলেট, সিগারেটের বড় ডামি প্যাকেট, সিগারেটের দামসহ স্টিকার ও লিফলেট, তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপনসহ ক্যাশবাক্স ও শোকেস, সিগারেট প্রদর্শন বোর্ড ইত্যাদি পাওয়া গেছে। এ তথ্য থেকে তামাক কোম্পানির আইন ভঙ্গের মাত্রা ও সীমা বোঝা যায়। তামাক কোম্পানি জাতীয় সংসদে প্রণীত আইনকে মান্য করার কোনো প্রয়োজনবোধ করে না।
অতি সম্প্রতি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন নির্দেশিকা জারি করেছে। এই নির্দেশিকায় (৬.১.২ ধারা) তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন ও প্রচারণা বন্ধ এবং পৃষ্ঠপোষকতা নিয়ন্ত্রণ করে এবং তামাকজাত দ্রব্য উৎপাদনকারী কোম্পানি ও বিক্রেতাকে লাইসেন্সের আওতাভুক্ত করে যত্রতত্র তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে দেশের শিশু, কিশোর ও তরুণ সমাজকে রক্ষা করা পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব বলে বর্ণনা করা হয়েছে। তামাকজাত দ্রব্যের বিক্রয়কেন্দ্র বা যেখানে তামাকজাত দ্রব্য ক্রয়-বিক্রয় হবে তার জন্য আবশ্যিকভাবে পৃথক ট্রেড লাইসেন্স প্রদান করা এবং প্রতি বছর নির্দিষ্ট ফি প্রদানসাপেক্ষে আবেদনের মাধ্যমে ওই ট্রেড লাইসেন্স নবায়নের কথা এই নির্দেশিকার ৮.১ ধারায় বর্র্ণনা করা হয়েছে। এই তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন নির্দেশিকার ৮.৫ ধারায় সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে- সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও স্বাস্থ্যসেবা দানকারী প্রতিষ্ঠানের আশপাশে ১০০ মিটারের মধ্যে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয়ের জন্য কোনো ট্রেড লাইসেন্স দেয়া যাবে না। স্থানীয় সরকারের উচিত- তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন নির্দেশিকাটির যথাযথ বাস্তবায়ন। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের এই মহতী উদ্যোগ কার্যকর হলে তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারের হার কমে গিয়ে মানুষ সুস্থ শরীর ও সুস্থ মন নিয়ে বাঁচার সুযোগ পাবে।
তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন নির্দেশিকা অনুযায়ী, তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন হলে প্রতিটি পৌরসভা কর্তৃক এর এলাকায় প্রতিটি তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয়ের দোকান তামাক দ্রব্য বিক্রয়ের জন্য লাইসেন্স নেয়া একটি বাধ্যতামূলক কাজ হিসেবে পরিগণিত হতো, যার ফলে প্রতিটি পৌরসভা কর্তৃক বার্ষিক তিন-চার লাখ টাকা অতিরিক্ত রাজস্ব আদায় হতো। ফলে প্রতিটি পৌরসভার অর্থনৈতিকভাবে আত্মনির্ভরশীল হওয়ার পথ আরো সুগম হতো। এর ফলে পৌরসভার নিজেদের কর্মচারীদের নিয়মিত বেতন দিতে এটি বেশি সহায়ক হতো। কারণ অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল পৌরসভাগুলোকে অর্থাৎ যেসব পৌরসভার স্থানীয় রাজস্ব আয় কম তাদের প্রায়ই এই বলে সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয়, যেসব পৌরসভা নিজের আদায়কৃত স্থানীয় রাজস্ব আয় দিয়ে তাদের কর্মচারীদের বেতন দিতে পারবে না তাদের পৌরসভার মর্যাদা বাতিল করে আবার ইউনিয়ন পরিষদ হওয়া উচিত। তাই পৌরসভাগুলো অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার অন্যতম পূর্বশর্ত হলো অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি এবং এ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে তামাকজাত পণ্যের পাশাপাশি প্লাস্টিকের বোতলে কোমল পানীয় বিক্রয়ের দোকানগুলোর ওপর পৌরকর আরোপ করে সফলভাবে আদায় নিশ্চিত করা। কিন্তু তামাক কোম্পানিগুলোর দৌরাত্ম্যের কারণে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন দুরূহ হয়ে পড়েছে এবং তামাকের ব্যবহার বৃদ্ধির জন্য বিজ্ঞাপন ও প্রচারণার সব কৌশল তারা জোরদার করে চলেছে। ফলে আগামী দিনগুলোতে আরো লাখ লাখ মানুষ জীবন বাঁচাতে ব্যর্থ হবে এবং তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারজনিত কারণে সৃষ্ট রোগ যেমন- ক্যান্সার, হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হওয়া, উচ্চ রক্তচাপ- এসব কারণে মৃত্যুমুখে পতিত হবে। অধিকন্তু লাখ লাখ যুবক সিগারেট সেবন দিয়ে নেশার জগতে হাতেখড়ি নিয়ে তার পর ইয়াবা, ড্যান্ডি, হেরোইন, আইস প্রভৃতি সেবনের পথ ধরে জীবনকে ব্যর্থ ও নিঃশেষ করবে।
উবিনীগের এক গবেষণা তথ্যে দেখা যায় যে, বাংলাদেশে ২০১৬ সালে ৪৬ হাজার ৪৭২ একর জমিতে ৮৭ হাজার ৬২৮ টন তামাকপাতা উৎপাদন হয়। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ২০১৮-১৯ সালের কৃষি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রতি একর জমিতে ১.২২ টন ধান উৎপাদন হয়েছিল। তামাক চাষের ওই ৪৬ হাজার ৪৭২ একর জমিতে ধান চাষ করলে দেশে আরো ৫৬ হাজার ৬৯৫ টন ধান উৎপাদিত হতে পারত। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ও ইউনিসেফের এমআইসিএস ২০১৯ সালের তথ্য অনুযায়ী, এখনো বাংলাদেশে ২৮ শতাংশ শিশু খাদ্যের অভাবে অপুষ্ট এবং তারা বেড়ে উঠতে পারছে না। জাতিসঙ্ঘের তথ্য অনুযায়ী, পৃথিবীতে এখনো ৬৯ কোটি মানুষ ক্ষুধায় কাতর, যা পৃথিবীর জনসংখ্যার ৮.৯ শতাংশ।
তামাক শিল্পে অনেক মেধাবী ব্যক্তিরা কাজ করেন যারা এ জীবনঘাতী দ্রব্যের ব্যবসার প্রসার না করে রাষ্ট্র পরিচালনার দক্ষকর্মী বা দারিদ্র্য বিমোচনের কারিগর হয়ে মানবকল্যাণে তাদের মেধা কাজে লাগাতে পারতেন। এ ছাড়াও কয়েক হাজার মানুষ বিড়ি-সিগারেট-জর্র্দা-গুল তৈরি, বিপণন ও তামাক চাষে লিপ্ত যা আসলে মানুষ মারার আয়োজন ও পণ্ডশ্রম। এদের মেধা ও শ্রম মানব কল্যাণে কোনো কাজে আসছে না, বরং মানুষের মৃত্যুদূত হিসেবে তারা কাজ করছেন।
অনেক অমানবিক বিশেষজ্ঞ এই বলে খোঁড়া খোঁড়া যুক্তি দেন যে, তামাকশিল্প প্রসারের সুযোগ না দিলে রাষ্ট্র অনেক টাকার রাজস্ব হারাবে। যেকোনো নাগরিকই এ প্রশ্ন করতে পারে, রাষ্ট্র টাকার অঙ্কের লাভ-ক্ষতির হিসাবের সাথে কি তার নাগরিকদের জীবন-মৃত্যুর হিসাবের তুলনা করবে না? টাকা-পয়সা আর বিশাল বাজেটের চেয়ে নাগরিকদের জীবনের মূল্য অনেক বেশি বলে কল্যাণকর যেকোনো রাষ্ট্র মেনে নেবে।
জাতিসঙ্ঘ গ্লোবাল কমপ্যাক্ট করপোরেট ব্যবসার ভবিষ্যতে টিকে থাকার জন্য ১০টি মূল নীতিমালার কথা বলেছে। এই নীতিমালা ব্যবসায় নৈতিকতা ও মূল্যবোধ ব্যবস্থার ওপর জোর দিয়েছে। এই নীতিমালায় আরো বলা হয়েছে- করপোরেট ব্যবসাগুলোকে এমনভাবে ব্যবসা করতে হবে যাতে তারা মানবাধিকার লঙ্ঘন না করে, শিশুশ্রম শোষণ না করে, পরিবেশের ক্ষতি না করে, নিজেদের ক্ষুদ্র স্বার্থে দুর্নীতির প্রসার না ঘটায়, অন্যদের ভয়-ভীতি না দেখায়, ঘুষ দিয়ে নিজেদের স্বার্থ হাসিল না করে ইত্যাদি।
বাংলাদেশে তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবসা প্রসারে ও প্রচারে তামাক কোম্পানিগুলো যেভাবে কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে সে ক্ষেত্রে তারা নিজেরাই জাতিসঙ্ঘ গ্লোবাল কমপ্যাক্ট করপোরেট ব্যবসায় পরিচালনার মূল নীতিগুলোর নিরিখে নিজেদের মূল্যায়ন করতে পারে। রাষ্ট্র ও সমাজ সবাইকে সবাই সজাগ হতে হবে, যাতে ক্ষমতাধর বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানগুলো নিরীহ, ক্ষমতাহীন মানুষদের জীবন নিয়ে যাচ্ছে তাই বাণিজ্য করে, তামাকজনিত রোগে তাদের মৃত্যুমুখে ঠেলে দিয়ে টাকার জাহাজ নিয়ে দিন শেষে ব্রিটেন, আমেরিকা, জাপান কিংবা সুইজারল্যান্ডে পাড়ি জমাতে না পারে।