www.agribarta.com:: কৃষকের চোখে বাংলাদেশ
শিরোনাম:

ডেইরি খাত : অপার সম্ভাবনার হাতছানি


 মাহমুদুল হাসান সাকিব    ৫ ডিসেম্বর ২০২১, রবিবার, ১০:৩২   সম্পাদকীয় বিভাগ


তোতা মিয়া, আতা মিয়া দুই ভাই। তোতা মিয়া ঢাকার একটি বেসরকারি স্কুলে পিয়নের কাজ করে। হঠাৎ চাকরি চলে যাওয়ার স্ত্রী-সন্তান নিয়ে গ্রামে চলে আসে। তার ভাই আতা মিয়া গ্রামের প্রভাবশালী ব্যাক্তি। কিন্তু তোতা মিয়ার বাড়ি, আঙিনার অল্প জায়গা, দুই বিঘা চাষের জমি ছাড়া আর কিছুই নেই। কিছুদিন পর তোতা মিয়া প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ডেইরি বিষয়ক কর্মশালায় অংশগ্রহণ করে। সেখান থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে তার কিছু জমানো টাকা এবং বড় ভাই থেকে কিছু টাকা ধার নিয়ে ২ টা হলস্টেইন ফ্রিজিয়ানের ক্রস ব্রিড ক্রয় করে। সে তার দুই বিঘা জমিতে ঘাসের চাষ করে। একটা সময় পর সে দুধ বিক্রি করে ধার করা টাকা পরিশোধ করে, তার খামারও বর্ধিত করে। দুধ সংরক্ষনের জন্য সে তার বড় ভাই এর ফ্রিজ ব্যবহার করে। একসময় গুঁড়া দুধ দিয়ে যে গ্রামের চাহিদা মিটতো সে গ্রামে এখন ঘরে ঘরে পৌঁছে যাচ্ছে র (Raw) মিল্ক। এছাড়াও দুগ্ধজাত পণ্য দই, পনির, ঘি, মাখন বিক্রি করেও সে স্বাবলম্বী। তোতা মিয়া নিয়মিত সংক্রামক রোগের টিকা দেয় এবং যে কোনো সমস্যায় ভেটেরিনারিয়ান এর শরণাপন্ন হয়।

উপরের অণুগল্পটি কাল্পনিক হলেও তা বাংলাদেশের ডেইরি খাতের সমস্যা ও অপার সম্ভাবনার পথ দেখায়। কীভাবে? আসুন তাহলে মিলিয়ে নেই -

কৃষিপ্রধান দেশ বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে প্রাচীনকালের পর্যটক, কবি, সাহিত্যিকগণ রচনা করেন গল্প, কবিতা, উপন্যাস৷ বাংলার রুপকে আরও বাড়িয়ে তোলে এদেশের কৃষিখাত যা কৃষি, প্রাণিসম্পদ, মৎস্য এই তিনটির সমন্বয়ে গঠিত। এ দেশের ক্লান্তিলগ্নে কৃষি যেন এক আস্থার নাম। এ আস্থা একদিনে তৈরি হয়নি। সফলতার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হয় ১৯৭৩ সালের ১৩ই ফেব্রুয়ারি ময়মনসিংহে অবস্থিত বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ চত্বরে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, বাংলার রাখাল রাজা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দ্বারা। দেয়া হয় কৃষিবিদদের প্রথম শ্রেণির মর্যাদা। আকাশে বাতাসে ধ্বনিত হয়-" বঙ্গবন্ধুর অবদান কৃষিবিদ ক্লাস ওয়ান।" বঙ্গবন্ধু কৃষিশিক্ষা ও গবেষণাকে বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করেন। তারই ধারাবাহিকতায়
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার
বিচক্ষণ নেতৃত্বে দেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ, মাংস উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ, দুধ-ডিম উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হবার পথে, গবাদিপশু উৎপাদনে বিশ্বে ১২তম, ছাগলের দুধ উৎপাদনে বিশ্বে ২য়,ছাগলের সংখ্যা ও মাংস উৎপাদনে বিশ্বে ৪র্থ, মাছ উৎপাদনে বিশ্বে রোল মডেল। এদেশের প্রাণিজ আমিষের ৮১ শতাংশ অবদান প্রাণিসম্পদের। কোনো একটা খাতের গুরুত্ব বোঝার একটি সহায়ক হচ্ছে জিডিপি। জিডিপিতে যে খাতগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে তার মধ্যে কৃষিখাত অন্যতম। ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে জিডিপিতে ৬৭ শতাংশ অবদান রাখে উৎপাদন, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসা, পরিবহন, কৃষি ও নির্মাণ। ২০১৯-২০২০ সালে জিডিপিতে প্রাণিসম্পদের অবদান ১.৪৩ এবং প্রবৃদ্ধির হার ৩.০৪।দেশের চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য প্রাণিসম্পদের গুরুত্বপূর্ণ উপপণ্য বা উপজাত পণ্য। শিল্পোৎপাদন ও জিডিপিতে এর অবদান যথাক্রমে ২% ও ০.৬%। ২০১৭-১৮ বছরে রপ্তানিতে তৈরি পোষাকের পরই চামড়া শিল্পের অবদান। ২০১৭ সালকে বাংলাদেশ
সরকার চামড়া, চামড়াজাত পণ্য এবং চামড়াজাত
পাদুকাকে “Products of the Year” ঘোষণা করেন।

এদেশের ১৫২.০২ লাখ মেট্রিক টন চাহিদার বিপরীতে বার্ষিক দুধ উৎপাদন ১০৬.৮০ লাখ মেট্রিক টন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, প্রতিদিন একজন মানুষের কমপক্ষে ২৫০ মিলিলিটার দুধ গ্রহণ করা উচিত কিন্তু আমরা পাচ্ছি ১৭৫.৬৩ মিলিলিটার। বাকি চাহিদা পূরণ হচ্ছে আমদানিকৃত পণ্য দিয়ে। বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনে যে ২২৭ টি পণ্যের তালিকা রয়েছে তার ৮৮টি কৃষি ও কৃষিজাত পণ্য এবং এতে রয়েছে মিল্ক পাউডার, বাটার অয়েল এন্ড ঘি, ফ্লেবারড মিল্ক, লো ফ্যাট মিল্ক এর মত ডেইরি পণ্য। শুধুমাত্র দুগ্ধ এবং দুগ্ধজাত পণ্য আমদানিতে ব্যয় হচ্ছে বার্ষিক প্রায় একুশ শত কোটি টাকা। এদেশের ডেইরি খাত একটি উদীয়মান ও প্রতিষ্ঠিত শিল্প। লক্ষণীয় বিষয়, ২০০৯-২০১০ সালে যেখানে বার্ষিক দুধ উৎপাদন ছিল ২৩.৭০ লাখ মেট্রিক টন সেখানে ২০১৮-২০১৯ এবং ২০১৯-২০২০ বছরে এ পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৯.২৩ লাখ মেট্রিক টন এবং ১০৬.৮০ লাখ মেট্রিক টন। এই পরিমাণ উৎপাদিত দুধ দিয়েই পূরণ হচ্ছে দেশের প্রাণিজ আমিষের ১০% এরও বেশি। যথোপযুক্ত দৃষ্টিতে এই খাত প্রোটিনসহ আরো পুষ্টির চাহিদা মেটাতে সক্ষম।

বাংলাদেশের ডেইরি খাতের সমস্যার দিকে এবার দৃষ্টিপাত করা যাক। সমস্যাগুলো হচ্ছে - গাভীর জাত, দুধের মূল্য অসংগতি ও বাজার ব্যবস্হা, পশুখাদ্যের অস্হিতিশীল দাম, ঘাস চাষে খামারিদের জ্ঞানহীনতা এবং দক্ষ জনবলের অভাব, টিকা দানে অনিহা, সংক্রামক রোগ এবং কোয়াক দ্বারা ভুল চিকিৎসা। যেখানে আমেরিকায় একটি গরু প্রতিদিন গড়ে ৫০-৫৫ লিটার দুধ দেয় সেখানে আমাদের দেশে পাচ্ছি মাত্র ৫-৬ লিটার। আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে ২-৪ লিটারও পাই। এক্ষেত্রে জাত উন্নয়ন জরুরি। আমাদের প্বার্শবর্তী দেশ ভারত, পাকিস্তান যেভাবে এগিয়েছে আমরা তেমনটা পারিনি। ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার দেশটিতে যেখানে জমির পরিমাণ কমেছে সেখানে গাভীর জাত উন্নয়ন গুরুত্বপূর্ণ। এদেশের তাপমাত্রার সাথে মানানসই ব্রিডগুলোর (হলস্টেইন ফ্রিজিয়ান ক্রস ব্রিড, রেডসিন্ধি, শাহিওয়াল) জাত উন্নয়ন জরুরি। তবে আশার কথা হচ্ছে দুধ উৎপাদন তুলামুলকভাবে বাড়ছে। ২০০৯-২০১০ সালে যা ছিল ৩৯ মিলিলিটার, ২০১৯-২০২০ সাল এ তা দাঁড়িয়েছে ১৭৫.৬৩ মিলিলিটারে। অর্থাৎ বিগত ১০ বছরে দুগ্ধজাত পণ্যের ব্যবহার বেড়েছে প্রায় ৫ গুণ।

আরেকটি সমস্যা হচ্ছে দুধের দামের অসংগতি। মফস্বলে যেখানে একজন ভোক্তা ৮০-১০০ টাকা কেজিতে দুধ কিনছে সেখানে গ্রাম এলাকায় দেখা যাচ্ছে ৩০-৪০ টাকা কেজি, আবার কোথাও কোথাও আরও কম। আবার অনেক জায়গায় দেখা যাচ্ছে খামারিরা ন্যায্যমূল্য না পেয়ে দুধ ফেলে দিচ্ছে, এসব চিত্র সোস্যাল মিডিয়ায়ও লক্ষণীয়। এ সমস্যা সমাধানে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানেরও এগিয়ে আসা উচিত। দুধ পচনশীল, ৫-৬ ঘন্টা সাধারণ তাপমাত্রায় ভালো থাকে, তাই প্রত্যেক উপজেলায় সম্ভব হলে ইউনিয়ন পর্যায়ে মিল্ক কালেক্টর এবং স্টোরেজ ব্যাবস্থার সুযোগ করা যায়, তাতে হয়তো পৌঁছে যাবে সুজলা-সফলা-শস্য-শ্যামলা বাংলাদেশের প্রতিটি ঘরে আদর্শ খাদ্য দুধ। এ ক্ষেত্রে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারি ও সমবায় প্রতিষ্ঠানগুলোর এগিয়ে আসতে হবে। দুগ্ধজাত পণ্য যেমন ফ্লেভারড মিল্ক হয়ে উঠতে পারে আরেক সম্ভাবনার ক্ষেত্র। আমরা পিপাসায় সাধারণত কোমল পানিয় খাই যাতে পুষ্টিগুণ নেই বললেই চলে। কিন্তু ফ্লেভারড মিল্ক তৃষ্ণা মিটানোর পাশাপাশি দিতে পারে শরীরের জন্য পুষ্টির যোগানও। কারণ কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফ্যাট, ভিটামিন, মিনারেল সঠিকমাত্রায় রয়েছে আদর্শ খাদ্য দুধে। বিশেষজ্ঞদের মতে, শক্তি, মেধা, গড় আয়ু বৃদ্ধি, শিশুর জন্মের ওজন বৃদ্ধি, শিশু মৃত্যুহার হ্রাস প্রভূতি নির্ভর করে মায়ের পুষ্টির ওপর। গর্ভবতী অবস্থায় প্রতিদিন এক গ্লাস দুধ পান মায়ের শরীরের এ পুষ্টির চাহিদা অনেকাংশেই মেটাতে পারে৷ জন্মের পর শালদুধ যেমন জীবনরক্ষা করে তেমনি প্রতিদিন এক গ্লাস দুধ পান দিতে পারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পুষ্টির যোগানও। দুগ্ধজাত পণ্যও মানব শরীর সতেজ রাখে, দই পরিপাকতন্ত্র ভালো রাখে।

ডেইরি খাতে আরেকটি অন্তরায় হচ্ছে সংক্রামক রোগ ও অপচিকিৎসা। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যে সংক্রামক রোগগুলো বেশি হয় সেগুলোর টিকা নিশ্চিতকরণ, অনেকাংশেই রোগের ঝুঁকি কমায়। ক্ষুরারোগ, তড়কা, বাদলা, লাম্পি স্কিন ডিজিজ এর মত রোগগুলো গ্রাস করতে পারে পুরো খামারকে। সংক্রামক রোগে দুধ উৎপাদন অনেক কমে যায় এবং অপচিকিৎসায় উৎপাদন হ্রাসের পাশাপাশি মৃত্যু ঘটায়। এ থেকে উত্তরণের জন্য যে কোনো সমস্যায় ভেটেরিনারিয়ান এর শরণাপন্ন হতে হবে।

পশুখাদ্যের অস্থিতিশীল দাম আরেকটি অন্তরায়। এক্ষেত্রে নিজ উৎপাদিত খাবার আশার আলো দেখাবে। একটি গাভীর দুধ উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ায় কাঁচাঘাস। কাঁচাঘাস উৎপাদনে খামারিদের দিক-নির্দেশনা প্রয়োজনে প্রশিক্ষণ, অনেকাংশে এ সমস্যা লাঘব করতে পারে। বাড়ির আঙিনায় ভুট্টা চাষ একসাথে ঘাসের অন্যদিকে দানাদার এর যোগানও দিতে পারে। ঘাসের ঘাটতি হ্রাসে সাইলেজ, হে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। একটা গাভীর দুধ উৎপাদন ক্ষমতা অনেকটা ম্যানেজমেন্ট এর উপর নির্ভর করে। ড্রাই পিরিয়ড বৃদ্ধি, সুষম খাবার সরবরাহ, এন্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার, ভিটামিন ও মিনারেল জাতীয় খাবার, পর্যাপ্ত পরিমাণে পরিস্কার পানি সরবরাহ, গাভী-বাছুরের পরিচর্যা এসব বিষয়গুলোর সাথেও ওতোপ্রোতোভাবে জড়িত। তাই এ বিষয়গুলো একটি ডেইরি খামারে অবশ্যই সঠিকভাবে বৈজ্ঞানিক উপায় অবলম্বন করে পরিচালনা করতে হবে।

দুধ বিক্রির পাশাপাশি দুগ্ধজাত পণ্য যেমন দই, পনির, ঘি, মাখন প্রভৃতি থেকেও একজন ডেইরি খামারি বিশেষভাবে লাভবান হতে পারে। দুগ্ধজাত পণ্যের দাম এবং গ্রহণযোগ্যতা দিনকে দিন বাড়ছে৷ ডেইরি শিল্প আসলে একটা বিজ্ঞান। যে খামারি যতটা বৈজ্ঞানিক উপায় অবলম্বন করবে তার সফলতা হবে তত দ্রুত, মসৃণ হবে তার পথ চলা।

এদেশের প্রেক্ষাপটে কিছু আশার কথা হল-
ডেইরি শিল্পের অগ্রগতির লক্ষ্যে বর্তমান সরকারের প্রচেষ্টায় কিছু পরিকল্পনার বাস্তবায়ন হয়েছে। যেমন ডেইরি খাতে সমবায়ের উপস্থিতি, উন্নত প্রযুক্তি সরবরাহ, প্রাণী স্বাস্থ্য রক্ষায় ভেটেরিনারি সেবা বৃদ্ধি, খামারিদের ঋণ সুবিধা প্রদান। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর থেকেও বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশগ্রহণ করছে খামারিরা। প্রাণিসম্পদের সাথে জড়িত কর্মকর্তারাও সেবা দিচ্ছেন নিরলসভাবে। এছাড়াও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে এলডিডিপি (লাইভস্টক অ্যান্ড ডেইরি ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট) প্রকল্প নেয়া হয়েছে, যা ডেইরি শিল্প তথা সমগ্র প্রাণিসম্পদকে এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। বর্তমানে দেশের মোট শ্রমশক্তির ২০% প্রত্যক্ষ এবং ৫০% পরোক্ষভাবে প্রাণিসম্পদের সাথে জড়িত। ক্রমান্বয়ে বাড়ছে দেশের লাইভস্টক পপুলেশন। ২০১০-২০১১ সালে লাইভস্টক পপুলেশনের যে পরিমাণ ছিল ৩৩০৪.৯০ লক্ষ, ২০১৮-২০১৯ সাল এবং ২০১৯-২০২০ সালে এ পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ৪০২৫.৬৩ লক্ষ এবং ৪১২২.৪৪ লক্ষ। এর মধ্যে ২০১৮-২০১৯ সাল এবং ২০১৯-২০২০ সালে গবাদিপশুর পরিমাণ ৫৫৫.২৮ লক্ষ এবং ৫৫৯.২৬ লক্ষ। ২০১০-২০১১ সালে এ পরিমাণ ছিল ৫১৬.৮৪ লক্ষ, অর্থাৎ পরিমাণ দিনকে দিন বাড়ছে, সেই সাথে বাড়ছে প্রাণিসম্পদ সেবাও। সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মাংস উৎপাদন। ৭২.৯৭ লাখ মেট্রিক টন চাহিদার বিপরীতে মাংস উৎপাদন হচ্ছে ৭৬.৭৪ লাখ মেট্রিক টন। ২০০৯-২০১০ সালে যা ছিল ১২.৬০ লাখ মেট্রিক টন, ২০১৯-২০২০ সালে তা বেড়ে হয়েছে ৭৬.৭৪ লাখ মেট্রিক টন। অর্থাৎ বিগত ১০ বছরে মাংস উৎপাদন বেড়েছে ৬ গুণ। দেশের উৎপাদিত পশু দিয়ে হচ্ছে কোরবানি, যা দেশের জিডিপিতে রাখবে ভূমিকা। বর্তমানে দেশের শিক্ষিত বেকার জনগোষ্ঠী ডেইরি খামারের দিকে ঝুঁকছে, অনেকেই চাকরির পাশাপাশি শখের বশে খামার করছে। ডিজিটাল বাংলাদেশে প্রযুক্তির ব্যবহার বেড়েছে বিগত দশকগুলো থেকে কয়েকগুণ, যা প্রাণিসম্পদ খাতকে আরও এগিয়ে নিতে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে পারে। অতএব সরকারি, বেসরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি ভোক্তা থেকে শুরু করে সমবায় প্রতিষ্ঠানগুলোর সহযোগিতায় অতিদ্রুতই ডেইরি শিল্পে স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে দেশ।
[উক্ত প্রতিবেদনে, প্রদত্ত তথ্যগুলো প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর এর ডাটাবেজ থেকে নেওয়া হয়েছে]

আমি সেই দিনের স্বপ্ন দেখি যেদিন তোতা মিয়ার গ্রামের মত প্রতিটি গ্রাম হবে ডেইরি শিল্পে স্বয়ংসম্পূর্ণ।


মাহমুদুল হাসান সাকিব
৪র্থ বর্ষ, ভেটেরিনারি অনুষদ
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ।




  এ বিভাগের অন্যান্য