.jpg)
২০১৫ সালে চাকরি ছেড়ে স্বপ্ন দেখেছিলেন উদ্যোক্তা হওয়ার। প্রথমেই পেঁপে চাষে বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়তে হয় মুহাম্মদ তৌহিদুল আলমকে। সেই সময় পরিবার এবং প্রতিবেশীদের তিরস্কার সহ্য করতে হয়েছে। কিন্তু হাল ছাড়েননি তিনি। পরিত্যক্ত জমিতে কঠোর পরিশ্রম আর আত্মবিশ্বাস নিয়ে শুরু করেন নতুন যাত্রা।
নিজের ৯ বিঘা জমিতে উন্নত জাতের চারা সংগ্রহ করে গড়ে তোলেন কুল বাগান। ২০১৯ সালে কুল চাষ শুরু করে ২০২১ সালে শুরু করেন বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি। আজ সেই কুল বাগান তাকে কৃষি উদ্যোক্তার পরিচয়ে পরিচিত করেছে। তার বাগানে এখন রয়েছে ১৩৬০টি কুল গাছ, যা সাত মাস পর থেকে দশ বছর ধরে ফল দেয়।
শুধু নিজের জন্যই নয়, তার এই উদ্যোগ স্থানীয় শ্রমিকদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছে। প্রতিদিন প্রায় ১৫ জন শ্রমিক তার বাগানে কাজ করেন। তার উৎপাদিত কুল এখন দেশের সীমানা ছাড়িয়ে ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যে পৌঁছে গেছে।
তৌহিদুলের বাগানে রয়েছে অস্ট্রেলিয়ান বল সুন্দরী, কাশ্মীরি কুল, থাই কুলসহ বিভিন্ন প্রজাতির কুল। এসব কুল স্থানীয়ভাবে বরই নামে পরিচিত। এছাড়া তার বাগানে রয়েছে ফিলিপাইনের গেন্ডারি, সাইট্রাস ফল, সাত প্রজাতির কলা, এবং বিভিন্ন প্রকার পেয়ারা ও মিষ্টি আলু।
তিনি জানান, "হতাশা দিয়ে শুরু হলেও আল্লাহ আমার গল্পটা সফলতা দিয়ে শেষ করেছেন। প্রতিদিন বাগান দেখতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ আসে। আমার উৎপাদিত ফসল বিক্রি করে হালাল উপায়ে জীবিকা নির্বাহ করছি। মাটি ভালোবাসলে মাটি কাউকে হতাশ করে না।"
এবছর তিনি প্রায় ১৩ হাজার কেজি কুল বিক্রির আশা করছেন। ইতিমধ্যে ১০০০ কেজি কুল বিক্রি করেছেন, যার প্রতি কেজির দাম ১৫০ টাকা। পর্যটকেরাই সরাসরি বাগান থেকে কুল কিনে নিয়ে যান।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হাসনুজ্জামান বলেন, "তৌহিদুল আলম একজন সফল কৃষক। আমরা তাকে সার, বীজ, কীটনাশকসহ প্রয়োজনীয় উপকরণ দিয়ে সহযোগিতা করেছি। সে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে ফসল চাষে প্রশিক্ষণ নিয়েছে এবং নতুন প্রজন্মের কৃষকদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছে।"