ঢাকা, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, সোমবার

কৃষি পরিবারের বউ হয়েছেন দেশসেরা কৃষক



ক্যারিয়ার

এগ্রিবার্তা ডেস্ক

(৭ মাস আগে) ২১ এপ্রিল ২০২৫, সোমবার, ৯:২১ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ৯:১০ অপরাহ্ন

agribarta

চৈত্রের খরতাপে শুকিয়ে যাওয়া কুমার নদীর পাড়ে সাহিদা বেগম নামের এক নারী কৃষক গড়ে তুলেছেন অনন্য এক কৃষিবিপ্লব। ফরিদপুরের অম্বিকাপুরের গোবিন্দপুর গ্রামের এই পরিশ্রমী নারী আজ দেশের অন্যতম পেঁয়াজবীজ উৎপাদনকারী। ‘কালো সোনা’ খ্যাত এই বীজে তিনি নিজের ভাগ্য যেমন বদলেছেন, তেমনি বদলেছেন অসংখ্য শ্রমিক ও কৃষকের জীবিকাও।

মাত্র ২০ শতাংশ জমিতে ২০০৪ সালে চাষাবাদ শুরু করে আজ তিনি দেশের বিভিন্ন জেলায় প্রায় ১০ হাজার শতাংশ জমিতে পেঁয়াজবীজের চাষ করছেন। শুধু ফরিদপুরেই নয়, উত্তরবঙ্গের ঠাকুরগাঁও ও দিনাজপুরেও রয়েছে তাঁর মাঠ। তাঁর ব্র্যান্ড ‘খান বীজ’ ইতোমধ্যে কৃষকের আস্থার প্রতীক হয়ে উঠেছে।

সাহিদার দিনে শুরু হয় খুব ভোরে—পরিবার আর খামারের শতাধিক শ্রমিকের রান্না করে, জমিতে গিয়ে তদারকি করেন পুরো কার্যক্রম। অনেক সময় মাঠেই বসে খেয়ে নেন দুপুরের খাবার, সঙ্গী হয় তাঁর শ্রমিকেরা।

আজ তাঁর বাগানে ৩০০ জনের বেশি শ্রমিক মৌসুমি সময় কাজ করেন। অন্যান্য সময়ও ৫০–৬০ জন শ্রমিক নিয়মিত কর্মরত থাকেন। কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে তিনি পেয়েছেন ‘এআইপি (AIP)’ সম্মাননা, চ্যানেল আই স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড অ্যাগ্রো অ্যাওয়ার্ড, অনন্যা টপ টেনসহ অসংখ্য পুরস্কার।

তাঁর স্বামী বক্তার হোসেন, একজন ব্যাংক কর্মকর্তা, শুরু থেকেই সাহিদার পাশে থেকেছেন। তিনি জানান, ‘সাহিদার ধৈর্য, অধ্যবসায় ও পরিশ্রম একে একে সফলতায় রূপ নিয়েছে। মাঠে বসেই যে পরিমাণ কর্মসংস্থান তিনি গড়ে তুলেছেন, তা সত্যিই প্রশংসনীয়।’

ফরিদপুর বিএডিসির উপপরিচালক আখতারুজ্জামান খান জানান, এ বছর সাহিদা বেগমের কাছ থেকে দুই টনের মতো পেঁয়াজবীজ সংগ্রহ করবে সরকার। তিনি বলেন, ‘নারী কৃষক হিসেবে সাহিদা সত্যিই দৃষ্টান্ত।’

নিজের অভিজ্ঞতা স্মরণ করে সাহিদা বলেন, “কখনো ভাবিনি এত দূর আসব। অনাদরে বহু কষ্ট সয়েছি, কিন্তু পরিশ্রম থামাইনি। সেই কষ্টই আজ সোনার ফসল হয়ে ফিরে আসছে আমার ঘরে।”