agribarta

ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে নেই একজনও মনোরোগবিশেষজ্ঞ


ক্যাম্পাস

প্রথম আলো

(২ সপ্তাহ আগে) ৬ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার, ১০:৫৬ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ৪:০২ অপরাহ্ন

agribarta

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) বর্তমানে শিক্ষার্থী ৬ হাজার ১৯৯ জন। আসছে শিক্ষাবর্ষে স্নাতক পর্যায়ে ভর্তি হতে যাচ্ছেন ১ হাজার ১১৬ জন শিক্ষার্থী। তবে এই বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীর মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষার কোনো ব্যবস্থা নেই এ বিশ্ববিদ্যালয়ে।

উন্নত বিশ্বে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য মনোরোগবিশেষজ্ঞ থাকলেও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে হেলথ কেয়ার সেন্টারে আলাদা কোনো মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা ইউনিট বা স্থায়ী মনোরোগবিশেষজ্ঞ নেই। ফলে এখানকার ছাত্রছাত্রীরা হতাশা, মানসিক অবসাদ, বিষণ্নতা থেকে সুরক্ষার জন্য উপযুক্ত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে মোট শিক্ষক ৫৮৭। বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষকদের কাউন্সেলিং করার নির্দেশনা দেওয়া থাকলেও তা নিয়মিত হয় না বলে জানা যায়। ফলে পড়াশোনা ও পরীক্ষার মানসিক চাপ, সামান্য ঘটনায় অসহিষ্ণু আচরণ, রাগ-ক্ষোভের জেরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলা, ছোটখাটো বিষয় থেকে ঝগড়া, মারামারি, অসদাচরণের মতো একাধিক ঘটনা ঘটছে বিশ্ববিদ্যালয়ে।

আঁচল ফাউন্ডেশনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০২৩ সালে আত্মহত্যা করেন ৫১৩ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ৯৮ জন অর্থাৎ মোট সংখ্যার ১৯ দশমিক ১ শতাংশ। এর মধ্যে প্রেমঘটিত কারণে ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ, মানসিক সমস্যায় জর্জরিত হয়ে ২২ দশমিক ৭ শতাংশ ও অভিমানের কারণে ৩২ দশমিক ২ শতাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন।

এসব বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অনুষদের ৫৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের ওপর এক জরিপ চালান ইউএনবি প্রতিনিধি। এতে দেখা যায়, ৫০ জন শিক্ষার্থীর ৩৭ জন এই সেবার বিষয়ে কিছুই জানেন না। ছয়জন জানান, তাঁরা কিছুটা জানেন। বাকিরা জানান, তাঁরা এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো কার্যক্রম দেখেননি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী নাহিদ খান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে কাউন্সেলিং করার ব্যবস্থা আছে বলে শুনেছি। কিন্তু কোথায় করায়, তাদের সঙ্গে কীভাবে যোগাযোগ করব, এসব তথ্য জানা নেই।’

এ ছাড়া নেপাল-মালয়েশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীরা প্রতিবছর এ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে আসেন।

নেপাল থেকে পড়তে আসা চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী দীপেশ আরিয়াল বলেন, ‘নেপাল থেকে আমরা বাকৃবিতে পড়াশোনা করতে এসেছি। দেশ থেকে অনেক দূরে থাকি। এ ছাড়া পড়াশোনাসহ আরও অনেক বিষয়ে কখনো কখনো মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ি। তাই এখানে একজন মনোরোগবিশেষজ্ঞ পেলে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা খুবই উপকৃত হতাম।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক মো. হারুন-অর-রশিদ বলেন, শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের সুরক্ষার জন্য একটি কমিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকলেও নিয়মিত কার্যক্রম নেই।

রেজিস্ট্রার মো. অলিউল্লাহ বলেন, ‘বর্তমানে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নের কোনো কমিটি বা কার্যক্রম নেই। তবে কোনো সংগঠন এ ব্যাপারে এগিয়ে এলে সিন্ডিকেট সভার মাধ্যমে অতিদ্রুত তা বাস্তবায়ন করা হবে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের হেলথ কেয়ার সেন্টারে মানসিক স্বাস্থ্যসেবার ব্যবস্থা নিয়ে চিফ মেডিকেল অফিসার মো. সাইদুর রহমান বলেন, হেলথ কেয়ারে কোনো মনোরোগবিশেষজ্ঞ নেই। মানসিক রোগে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়।