বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগের শিক্ষার্থীরা একটি বিশেষ অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। তারা বাস্তব জীবনের সঙ্গে পাঠ্যবইয়ের জ্ঞান মেলানোর উদ্দেশ্যে মুন্সিগঞ্জের সাটঘাড়িয়ায় অবস্থিত ডাচ ডেইরি লিমিটেডের বায়োগ্যাস প্লান্ট পরিদর্শন করেন। এই প্রকল্পটি নবায়নযোগ্য শক্তির একটি সফল উদাহরণ এবং দেশের জ্বালানি নির্ভরতা কমানোর সম্ভাবনাময় উদ্যোগ।
শনিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে শিক্ষার্থীরা বায়োগ্যাস প্লান্টটি পরিদর্শন করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থায়নে এবং কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগের আয়োজনে এই ট্যুরটি অনুষ্ঠিত হয়।
২০১৭ সালের ৫ মে ২৬ একর জমিতে ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে শুরু হওয়া এই প্রকল্পটি সাত বছরে সফল অবস্থানে পৌঁছেছে। প্রকল্পের পরিচালক আসিফ মৃধা জানান, ১২০০ গরুর গোবর থেকে প্রতিদিন ২০০০ ঘন মিটার গ্যাস এবং ৪০০০ কেজি জৈব সার উৎপাদন করা হচ্ছে। উৎপাদিত গ্যাস দিয়ে ২৫০ কেভিএ ক্ষমতাসম্পন্ন জেনারেটরের মাধ্যমে প্রতিদিন ৪৪০ ভোল্ট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়, যা কোম্পানির দৈনিক বিদ্যুৎ চাহিদার ছয় ঘণ্টার জন্য যথেষ্ট।
শিক্ষার্থীদের এই ট্যুরে তাদের কোর্স শিক্ষক অধ্যাপক ড. চয়ন কুমার সাহা এবং কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ড. টুম্পা রানী সরকার উপস্থিত ছিলেন। আসিফ মৃধা এবং সিড বাংলার ব্যবস্থাপক মোস্তফা কামাল শিক্ষার্থীদের প্লান্টের কার্যক্রম সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দেন।
প্লান্টে দুটি কালেকশন পয়েন্ট রয়েছে যেখানে গরুর গোবর জমা করা হয় এবং পরে পানির সঙ্গে মিশিয়ে মিশ্রণটি অক্সিজেনহীন পরিবেশে ডাইজেশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গ্যাস এবং বায়ো স্লারি উৎপাদন করা হয়।
ডাচ ডেইরি লিমিটেডের কার্যক্রম শুধুমাত্র বায়োগ্যাস উৎপাদনে সীমাবদ্ধ নয়; প্রতিষ্ঠানটি ১১০০ বোয়ার জাতের ছাগল এবং ৩০০০ ভেড়া রাখার সক্ষমতা রাখে এবং প্রতিদিন ২০০০ কেজি দুধ উৎপাদন করে।
কোর্স শিক্ষক ড. চয়ন কুমার সাহা বলেন, “এ ধরনের পরিদর্শন শিক্ষার্থীদের বাস্তব জ্ঞানের সঙ্গে তাত্ত্বিক জ্ঞানকে মিলিয়ে চিন্তা করতে সাহায্য করবে।”
ডাচ ডেইরি লিমিটেডের বায়োগ্যাস প্লান্টটি বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য শক্তি উৎপাদনের একটি অনন্য দৃষ্টান্ত, যা শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।