www.agribarta.com:: কৃষকের চোখে বাংলাদেশ
শিরোনাম:

একাধিক অনিয়মের অভিযোগ বাকৃবি উপাচার্যের বিরুদ্ধে


 মুসাদ্দিকুল ইসলাম তানভীর, বাকৃবি প্রতিনিধি    ২৮ ডিসেম্বর ২০২২, বুধবার, ৯:১২   ক্যাম্পাস বিভাগ


বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) উপাচার্যসহ প্রশাসনে নিয়োজিত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে শিক্ষক নিয়োগ ও শিক্ষা সংক্রান্ত অনিয়ম, উপাচার্যের একসঙ্গে দুটি বাসভবন ব্যবহার, ডিপিপি বাস্তবায়নে ব্যর্থতাসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগ করা হয়েছে। বিশ^বিদ্যালয়ের আওয়ামী পন্থি শিক্ষকদের সংগঠন গনতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের একাংশ এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এসব অভিযোগ করেন।

সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কমপ্লেক্সের সম্মেলন কক্ষে ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের একাংশের সভাপতি অধ্যাপক ড. এম এ এম ইয়াহিয়া খন্দকার, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. পূর্বা ইসলাম, উপদেষ্টা পরিষদের আহবায়ক অধ্যাপক ড. মো. সাইদুর রহমানসহ সংগঠনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ ও সদস্যরা।

সংবাদ সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে ড. পূর্বা ইসলাম জানান, বাকৃবিতে বিগত ৩ বছর ধরে উপাচার্যের পছন্দের গুটিকয়েক ব্যক্তি প্রশাসনিক গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো দখল করে রেখেছে। ওই গুটিকয়েক অসৎ ও আদর্শহীন ব্যক্তি দ্বারা প্রশাসন পরিচালনা করায় বিশ^বিদ্যালয়ের লালিত ঐতিহ্য দিনের পর দিন নষ্ট হচ্ছে। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের ব্যর্থতায় দীর্ঘ সেশনজট সৃষ্টি হয়েছে। করোনার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে উপযুক্ত পদক্ষেপ না নিয়ে বিভিন্ন অজুহাতে শিক্ষার্থীদের বারবার সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা পেছানো হয়েছে। যার ফলে শিক্ষার্থীরা একটি দীর্ঘ সেশন জটে পড়েছে। অন্যদিকে, প্রশাসনিক ঢিলেমির কারণে বিশ^বিদ্যালয়ের ৭০ জন পিএইচডি শিক্ষার্থীকে সকল প্রক্রিয়া শেষ করার পরও ডিগ্রি অর্জন করতে প্রায় দেড় বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগে এবছর চরম অরাজকতার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিভাগীয় প্রধানের অনুমতি ছাড়াই শিক্ষক বদলি, একই ব্যক্তিকে একাধিক প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ দেয়া, এমনকি বাছাই কমিটির আপত্তি সত্ত্বেও নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে ড. ইয়াহিয়া খন্দকার বলেন, বাকৃবি উপাচার্য নিয়োগ পাওয়ার পর থেকেই উপাচার্যের বরাদ্দকৃত বাসভবন ছাড়াও পূর্বের বাসাটিও একই সাথে ব্যবহার করে আসছেন। তবে উপাচার্য নিয়োগের সময়ই বরাদ্দকৃত বাসাটি ব্যবহারের জন্য নিয়োগপত্রে বলা হয়ে থাকে। সেখানে তিনি একই সাথে দুটি বাসা ব্যবহার করে আসছেন, যেটি নিয়ম বহির্ভূত। এছাড়াও উপাচার্য কাগজে কলমে নানা ধরনের কাজের অযুহাতে প্রায় সময় ক্যাম্পাসে অনুপস্থিত থাকেন। অনেক জরুরি প্রয়োজনে উপাচার্যকে ক্যাম্পাসে পাওয়া যায়না বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, বিশ^বিদ্যালয় অধিকতর উন্নয়নের জন্য ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপোজালের (ডিপিপি) কাছ থেকে ২০১৮ সালে ৬শ’ ৫৯ কোটি টাকার বরাদ্দ দেওয়া হয়। তবে উপাচার্যের ব্যর্থতায় প্রকল্পের ৩ বছর মেয়াদকালে কোনো দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়নি। মোট অর্থের মাত্র ৭ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কাজের এই দীর্ঘসূত্রিতার কারণে বাকি টাকা ফেরত চলে গেছে পুণঃপ্রস্তাবনার জন্য।

সংবাদ সম্মেলনে ড. অধ্যাপক ড. মো. সাইদুর রহমান বলেন, বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক হয়রানিসহ একাধিক ঘটনার কোনো বিচার না হওয়া, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের শক্তি ও আওয়ামীপন্থি শিক্ষকদের সংগঠনে বিভাজন সৃষ্টি, বাসা বরাদ্দ কমিটির অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির কারণে শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের বাসা বরাদ্দে অনিয়মের জন্য দায়ী উপাচার্য ও তার ঘনিষ্ট প্রশাসনের ব্যক্তিবর্গরা।

অভিযোগের বিষয়ে বাকৃবি উপাচার্য বলেন, ইঞ্জিনিয়ারদের একটি কমিটি উপাচার্যের বাসভবনটি যাচাই-বাছাই করে দেখেছে সেটি ঝুঁকিপূর্ণ। তাই আমি ও আমার পরিবার এখন পুরাতন বাসায় থাকি।
ক্যাম্পাসে অনুপস্থিতির বিষয়ে তিনি বলেন, আমি মিটিং ব্যতিত কখনো ক্যাম্পাসের বাইরে যাই না।

বাসা বরাদ্দের অনিয়ম নিয়ে তিনি বলেন, এগুলোর আলাদা কমিটি আছে তারা দেখবে বিষয়গুলো।

বিচারহীনতার বিষয়ে বাকৃবি উপাচার্য জানান, এই সকল বিষয়ে আলাদা আলাদা কমিটি আছে। তারা কাজ করছেন। এসময় তিনি সাংবাদিকদের উপর হামলা বিচার করবেন বলেও আশ্বাস দেন।

শিক্ষকদের বিভক্তির বিষয়ে তিনি বলেন, আমি দুই পক্ষের সাথে পাঁচবার বসে আলোচনা করেছি। কিন্তু কোনো সমঝোতা হয়নি। তাদের দলীয় নেতৃত্বের দ্বন্দ্বে নিজেরাই বিভক্ত হয়েছে।

নিয়োগের অনিয়মের বিষয়ে উপাচার্য বলেন, নিয়োগ এবং বদলি নিয়ম মেনেই হয়েছে। আমার কোনো আত্মীয়-স্বজন বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ দেই নি।




  এ বিভাগের অন্যান্য