রংপুর বিভাগে চলমান আমন ধান ও চাল সংগ্রহ অভিযান ধীর গতিতে এগোচ্ছে। সরকারি নির্ধারিত দামের তুলনায় বাজারে ধান-চালের মূল্য বেশি হওয়ায় কৃষক ও মিল মালিকরা সরকারি গুদামে ধান-চাল সরবরাহে আগ্রহ হারাচ্ছেন। বিভাগের আট জেলার মধ্যে গড়ে মাত্র ৩ শতাংশ ধান সংগ্রহ হয়েছে। কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, এবং পঞ্চগড়ে এখনও এক কেজি ধানও সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি।
রংপুর আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস সূত্রে জানা গেছে, ১৭ নভেম্বর থেকে শুরু হয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে এ অভিযান। তবে দেড় মাস পার হলেও লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ধান সংগ্রহের হার মাত্র ৩ শতাংশ। দিনাজপুরে সবচেয়ে বেশি ৭ শতাংশ, ঠাকুরগাঁওয়ে ৩ শতাংশ, নীলফামারীতে ৬ শতাংশ এবং গাইবান্ধা ও রংপুরে ১ শতাংশ করে ধান সংগ্রহ হয়েছে। পুরো বিভাগের জন্য আমন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭৫,৯৪০ মেট্রিক টন, এর মধ্যে সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ২,১৮৭৭ মেট্রিক টন।
অপরদিকে আতপ চালের সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রা ১৮,১৬৪ মেট্রিক টন নির্ধারণ করা হয়েছে, যার মধ্যে সংগ্রহ হয়েছে ৬,১৬৫ মেট্রিক টন, অর্থাৎ ৩৯ শতাংশ। সেদ্ধ চালের ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা ১,৩৪,৭৫৪ মেট্রিক টন, আর সংগ্রহ হয়েছে ৫৯,০৩৪ মেট্রিক টন, যা লক্ষ্যমাত্রার ৪৮ শতাংশ।
কৃষকদের দাবি, সরকারি নির্ধারিত দামে ধান বিক্রি করলে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। পীরগাছার কৃষক বুলবুল মিয়া এবং কাউনিয়ার আফজাল হোসেন জানান, বাজারে ধানের দাম ৩৭-৩৮ টাকা কেজি হলেও সরকার প্রতি কেজি ৩৩ টাকায় সংগ্রহ করছে। এতে প্রতি মণে প্রায় ১,৪৫০ টাকায় বিক্রি করা সম্ভব হলেও, সরকারি দামে তা লোকসানী। কৃষকদের হিসাব অনুযায়ী, এক বিঘা জমিতে ধান উৎপাদনে খরচ হয় ১২ হাজার টাকা, অথচ সরকারি দামে বিক্রি করলে প্রাপ্তি হয় মাত্র ১০ হাজার টাকার কিছু বেশি।
রংপুর আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক জহিরুল ইসলাম জানান, বাজার দামের সঙ্গে সামান্য পার্থক্য থাকলেও তিনি আশা করেন যে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে।
