ঢাকা, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, সোমবার

মিরসরাইয়ে ঢ্যাঁড়শ চাষে স্বাবলম্বী কৃষকেরা



কৃষি

এগ্রিবার্তা ডেস্ক

(৭ মাস আগে) ২৬ এপ্রিল ২০২৫, শনিবার, ৫:৫৬ অপরাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ৯:০৭ অপরাহ্ন

agribarta

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ঢ্যাঁড়শ চাষ করে দিন বদলাচ্ছেন কৃষকেরা। প্রতি বছরই চাষের পরিমাণ বাড়ছে, এবছরও এর ব্যতিক্রম হয়নি। উচ্চফলনশীল ও দেশীয় জাতের ঢ্যাঁড়শ স্থানীয় বাজারের পাশাপাশি সীতাকুণ্ড এবং চট্টগ্রাম শহরের বাজারেও সরবরাহ হচ্ছে। মৌসুমের শুরুতে দাম কিছুটা কম থাকলেও বর্তমানে ভালো দামে বিক্রি হওয়ায় খুশি চাষিরা।

মিরসরাই উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এবার প্রায় ৯০ একর জমিতে ঢ্যাঁড়শ চাষ হয়েছে। প্রতি হেক্টর জমিতে ৩০ মেট্রিক টন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। হিসাব অনুযায়ী, মোট উৎপাদিত ঢ্যাঁড়শের বাজারমূল্য দাঁড়াবে প্রায় ৩ কোটি টাকা। ইছাখালী, মিরসরাই সদর, মঘাদিয়া, সাহেরখালী, ওয়াহেদপুর এবং খৈয়াছড়া ইউনিয়ন ঢ্যাঁড়শ চাষে এগিয়ে রয়েছে।

চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঢ্যাঁড়শ এখন লাভজনক ফসল হিসেবে জনপ্রিয়। যদিও এটি মৌসুমি সবজি, তবুও সারা বছরই উৎপাদন করা যায়। ঢ্যাঁড়শে কীটপতঙ্গের আক্রমণ কম, পাশাপাশি শ্রম ও সারের খরচও কম হওয়ায় এটি চাষে লাভ বেশি। বাড়ির নারী সদস্যরাও সহজেই ঢ্যাঁড়শ তুলতে পারেন, ফলে শ্রম ব্যয়ও কমে আসে। বিক্রির ক্ষেত্রেও সমস্যা হয় না, বাজারে চাহিদা সবসময়ই ভালো।

সাহেরখালী ইউনিয়নের দক্ষিণ মঘাদিয়া ঘোনার চাষি ইসমাইল হোসেন জানান, তিনি প্রায় ৬০ শতক জমিতে ঢ্যাঁড়শ চাষ করেছেন। উপজেলার বাজার ছাড়াও সীতাকুণ্ড, বড়দারোগারহাট ও চট্টগ্রাম শহরের বাজারে ঢ্যাঁড়শ বিক্রি করেন। বর্তমানে প্রতি মণ ঢ্যাঁড়শ ১২০০-১৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রায় ৩০ বছর ধরে তিনি এ চাষের সঙ্গে যুক্ত।

খৈয়াছড়া ইউনিয়নের চাষি জহিরুল ইসলাম জানান, ৪০ শতক জমিতে ঢ্যাঁড়শ চাষ করেছেন এবং এ পর্যন্ত প্রায় ২ লাখ টাকার ঢ্যাঁড়শ বিক্রি করেছেন। আরও দেড় লাখ টাকার বিক্রির আশা করছেন। যদিও মৌসুমের শুরুতে দাম কম ছিল, এখন ভালো দাম পাচ্ছেন।

ইছাখালী ইউনিয়নের চরশরত এলাকার চাষি ইকবাল হোসেন শাহীন বলেন, এবছর এক একর জমিতে ঢ্যাঁড়শ চাষ করেছেন। প্রায় ১৫ বছর ধরে তিনি ঢ্যাঁড়শ চাষ করছেন এবং এবছরও মোটামুটি ভালো দামে বিক্রি করতে পারছেন বলে জানান।

মিরসরাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রতাপ চন্দ্র রায় বলেন, উপজেলায় ৯০ একর জমিতে ঢ্যাঁড়শের আবাদ হয়েছে এবং ফলনও ভালো হয়েছে। প্রতি হেক্টরে ২৫ মেট্রিক টন উৎপাদন হয়ে থাকে। আগামীতে ঢ্যাঁড়শ চাষ আরও বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। তবে বর্তমানে ঢ্যাঁড়শ চাষে সরকারি কোনো প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে না বলেও জানান তিনি।