ঢাকা, ২১ অক্টোবর ২০২৫, মঙ্গলবার

শখ করে পুষতেন, এখন এই কোয়েলই তার জীবিকার উপায়



প্রাণীসম্পদ

দেশরুপান্তর পত্রিকা থেকে

(২ মাস আগে) ৩০ জুলাই ২০২৫, বুধবার, ২:১৮ অপরাহ্ন

agribarta

দিনাজপুর শহরের বালুয়াডাঙ্গার বাসিন্দা ইমরান খান শখ করেই কোয়েল পাখি পুষতেন। এখন এই কোয়েল পাখির খামার তার জীবন-জীবিকার উপায় হয়েছে। কোয়েল পাখি পালন করে হয়েছেন স্বাবলম্বী। নিজ বাড়িতে কোয়েল পাখির খামার করেছেন।

খামার গড়ে তোলা নিয়ে ইমরান খান বলেন, ‘৭ বছর আগে শখের বশে ছেলেমেয়েকে ১০টি কোয়েল পাখি কিনে দিয়েছিলাম। তখনই সম্ভাবনা চোখে পড়ে। আস্তে আস্তে খামার গড়ে তুলেছি। এখন প্রতি চার দিন পরপর আড়াই হাজার থেকে ৩ হাজার বাচ্চা হ্যাচারিতে ফুটিয়ে বিক্রি করছি। বাহাদুর বাজারের ব্যবসায়ীরা খামার থেকে ৮শ থেকে ১ হাজার ডিম কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। প্রতিমাসে খামার থেকে আয় হচ্ছে লক্ষাধিক টাকা।’

তিনি জানান, ছেলেমেয়ে ও স্ত্রীর সহযোগিতায় ৩শ’ কোয়েল পাখি নিয়ে খামার শুরু করেন। ধীরে ধীরে খামারের পরিসর বেড়েছে। কোয়েলের ডিম ও খাদ্যের হিসাব করে দেখা যায়, খরচের চেয়ে লাভ প্রায় দ্বিগুণ। প্রতিটি কোয়েল পাখি ৩৫ থেকে ৪০ দিনের মধ্যে ডিম দেওয়া শুরু করে। একটানা ১৮ মাস ডিম দেয়। এরপর পাখিগুলো বিক্রি হয় ৩শ’ টাকা কেজি দরে। প্রতিটি পাখি দিনে ২০ থেকে ২৫ গ্রাম খাবার খায়। একটি ডিমপাড়া কোয়েল পাখি বিক্রি হয় ৬৫ থেকে ৭০ টাকায়।

ইমরান খান বলেন, খামার চালাতে গিয়ে এক সময় ডিম ফুটানোর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন তিনি। শুরু করেন বাচ্চা ফুটানোর হ্যাচারি। প্রতি ৪ দিন পরপর হ্যাচারি থেকে ২ হাজার ৫শ’ থেকে ৩ হাজার কোয়েলের বাচ্চা উৎপাদন ও বিক্রি করছেন। প্রতিদিন তার খামার থেকে এক হাজার থেকে দেড় হাজার ডিম কিনে নিয়ে যাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। প্রতিটি ডিম বিক্রি হয় ৩ টাকা দরে। একদিনের বাচ্চা বিক্রি হয় ৭ থেকে ৮ টাকায়। ইমরান বলেন, ‘খামারে দুজন কর্মী নিয়মিত কাজ করছেন। তাদের প্রত্যেককে মাসে ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা বেতন দিয়ে যাচ্ছি। কর্মচারী মোবারক হোসেন বলেন, ‘আমি ছাড়াও আরও একজন এখানে কাজ করছে। ডিম ওঠানো, খাবার দেওয়া, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, সব কিছুই আমরা দুজন করি। খামার ছোট ছিল, এখন হ্যাচারি হয়েছে। আমাদের জন্য ভালো কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।’

দিনাজপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আশিকা আকবর তৃষা বলেন, ‘কোয়েল পাখির খামার গড়ে তুলে বেকারত্ব দূর করা সম্ভব। কোয়েলের ডিম আকারে ছোট হলেও পুষ্টিগুণে মুরগি বা হাঁসের ডিমের সমতুল্য। কোয়েল পাখির মাংস নিরাপদ খাদ্য হিসেবে বিবেচিত। খামারি ইমরান নিজ উদ্যোগে সফল খামার গড়ে তুলেছেন। তার খামারে শুধু নিজের নয়, অন্যদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আমরা প্রাণিসম্পদ বিভাগ থেকে নিয়মিত তার খামার পর্যবেক্ষণ করে যাচ্ছি।’

প্রাণীসম্পদ থেকে আরও পড়ুন

agribarta
প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা
মহিষ দেশের সম্পদ

সর্বশেষ