গাজীপুরের শ্রীপুরে একটি ভেজাল সার তৈরির কারখানায় অভিযান চালিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। এসময় বিপুল পরিমাণ সার, সার তৈরির কাঁচামাল ও মিক্সচার মেশিন জব্দ করা হয়। খবর- যায়যায়দিন। বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) বিকেলের দিকে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের ছাতির বাজার এলাকার আলিফ ফার্টিলাইজার নামের ওই কারখানায় এ অভিযান পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ব্যারিস্টার সজীব আহমেদ। এসময় তাঁর সাথে ছিলেন, উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সুমাইয়া সুলতানা,কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান, আফরোজা, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা কবির হোসেনসহ পুলিশ ও আনসার সদস্যরা। অভিযান সুত্রে জানা যায়, উপজেলার তেলিহাটি এলাকার ডাইলের ভিটা নামক স্থানে (এমসি বাজার-শিশু পল্লী সড়কের পাশে) সানজিদা নামের একজনের মালিকানাধীন একটি জায়গা ভাড়া নিয়ে ব্যবসা করে আসছিলেন আনারুল ইসলাম আলিফ নামের এক ব্যক্তি। গত দেড় বছর ধরেই সেখানে ভেজাল উপকরণ দিয়ে সার তৈরি করে বাজারজাত করে আসছিলেন তিনি। বুধবার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান পরিচালনা করে উপজেলা প্রশাসন। এ সময় বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নামে অর্ধ কোটি টাকার ভেজাল সার ও সার তৈরির কাঁচামাল জব্দ করা হয়। সুত্র আরও জানায়, বিভিন্ন ঠিকানা ও নাম ব্যবহার করে প্যাকেটজাত ও বাজারজাত করণের আলামত পাওয়া যায় অভিযানে। এসময় সেখান থেকে ৮টন আলিফ জিপসাম, ২টন পাওয়ার জৈবসার, ২ টন শক্তি জিংক প্লাস, ১.৫ টনগ্রোজিংক, ৪২৫ কেজি রোটন প্লাস, ১.২৫ জিপসামের কাচামাল, ৫৫০ কেজি জিংক এর কাচামাল, ৯৫০ কোজি ইটের গুড়া, ১.৫ টন খোলা জিপসাম, ২৬ কেজি ডায়াজিন, ২০ কেজি ফরফুরান ১৫জি, ১ টন গোটা মুসুর এবং ৩কেজি ইটের খোয়া দিয়ে তৈরি নিষিদ্ধ বাসুডিন জব্দ করা হয়। একই সাথ ভেজাল সার তৈরির কাচামাল ও মিক্সচারে মেশিন জব্দ করা হয়েছে। তবে, ভেজাল সারের বিষয়টি অবগত নয় জানিয়ে ওই জায়গার মালিক সানজিদা বেগম মুঠোফোনে বলেন,' মাসিক ভাড়ার ভিত্তিতে আলিফ নামের এক ব্যবসায়ী আমার জায়গাটি ভাড়া নেন। সেখানে ভেজাল সার তৈরি করা হতো কিনা সে বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা।'উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সুমাইয়া সুলতানা বলেন, 'ইউএনও স্যারের মাধ্যমে ওই কারখানায় অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। ইতোমধ্যে কারখানাটি তালা দেওয়া হয়। অভিযানকালে মালিকপক্ষের কাউকে পাওয়া যায়নি। আমাদের আসার খবর পেয়ে ওরা পালিয়েছে। আমরা আপাতত কারখানা বন্ধ করেছি। শুধুমাত্র জব্দকৃত পেকেটজাত ভেজাল সারের আনুমানিক মূল্য ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা হবে। সার গুলো ধ্বংস করার প্রক্রিয়া চলছে। কৃষকদের মাঝে আসল সারের ব্যবহার নিশ্চিত করতে আমাদের অভিযান চলমান।' অভিযান শেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ব্যারিস্টার সজিব আহমেদ যায়যায়দিনকে বলেন,' ভেজাল সারের কারখানার খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় সেখানে থাকা বিপুল পরিমাণ সার ও সার তৈরির মিক্সার মেশিনও জব্দ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ওই কারখানাটি সিলগালা করা হয়। জেলা সার ও বীজ মনিটরিং কমিটির সাথে যোগাযোগ করেছি। তাদেরকে সাথে নিয়ে দ্রুত সময়ের মধ্যে এগুলো ধ্বংস করা হবে।'
