ঢাকা, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, সোমবার

স্টেশনে থামে না ট্রেন, বিক্ষোভ



জাতীয়

এগ্রিবার্তা ডেস্ক

(৩ মাস আগে) ১৭ নভেম্বর ২০২৪, রবিবার, ৮:৪৭ পূর্বাহ্ন

agribarta

‘শিল্প ও সাংস্কৃতিক জনপদ কুমারখালী। এখানে রয়েছে বৃহৎ কাপুড়িয়া হাট। আছে রেলস্টেশন। তবু থামে না সুন্দরবন ও বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেন। এটা দুঃখজনক।’ আক্ষেপ করে কথাগুলো বলেন আন্তর্জাতিক পুরস্কারপ্রাপ্ত নূরুল টেক্সটাইলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাকারিয়া আনছার মিলন। তিনি কুমারখালী উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক।

মিলন বলেন, স্টেশনে ট্রেন দুটির যাত্রাবিরতির দাবিতে কর্তৃপক্ষকে ৭২ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেওয়া হয়েছে। আজ রোববার দুপুর ১২টায় আলটিমেটাম শেষ হবে। এর মধ্যে যাত্রাবিরতির উদ্যোগ না নিলে আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।

কুমারখালীর ওপর দিয়ে সুন্দরবন এক্সপ্রেস ৭২৫-৭২৬ এবং বেনাপোল এক্সপ্রেস ৭৯৫-৭৯৬ নামে ট্রেন দুটি ঢাকা-খুলনায় চলাচল করে। তবে কুমারখালীতে ট্রেন দুটির যাত্রাবিরতি নেই। এর প্রতিবাদে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেন থামিয়ে বিক্ষোভ করেন কয়েক হাজার মানুষ। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে যাত্রাবিরতির দাবিতে আলটিমেটাম দেন বিক্ষোভকারীরা। পরে কুমারখালী স্টেশনমাস্টার আশ্বস্ত করলে ট্রেনটি ছেড়ে দেন তারা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে স্টেশন চত্বরে ছাত্র-জনতা জড়ো হতে দেখা যায়। দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেন পৌঁছালে আটকে দেন বিক্ষোভকারীরা। কেউ কেউ পতাকা হাতে করে উঠে পড়েন ট্রেনে। ২২ মিনিট পর ট্রেনটি চলে যায়।

কুমারখালীর স্টেশনমাস্টার শফিকুল ইসলাম বলেন, যাত্রাবিরতির দাবিতে বিক্ষোভকারীরা একটি স্মারকলিপি দিয়েছেন। তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। নির্দেশনা পেলে যাত্রাবিরতির উদ্যোগ নেওয়া হবে।

এলাকাবাসী জানান, গড়াই নদীর কূলঘেঁষে ১৮৬৯ সালে প্রতিষ্ঠিত কুমারখালী পৌরসভা। এটি শিল্প প্রসিদ্ধ ও পর্যটন এলাকা। এখানকার তাঁত ও বস্ত্রশিল্প জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে প্রসিদ্ধ লাভ করেছে। এই সাংস্কৃতিক জনপদে রয়েছে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কুঠিবাড়ি, বাউল সম্রাট লালন শাহের আখড়াবাড়ি, বাংলাসাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক মীর মশাররফ হোসেনের বাস্তভিটা, গ্রামীণ সাংবাদিকতার পথিকৃৎ কাঙাল হরিনাথ মজুমদারের বাড়ি ও স্মৃতি জাদুঘর, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের বীরসেনা বাঘা যতীনের জন্মভিটা।

কুমারখালী তাঁত বোর্ডের উপমহাব্যবস্থাপক মেহেদী হাসান জানান, সপ্তাহের শনি ও মঙ্গলবার বিশাল কাপুড়িয়ার হাট বসে। এ দু’দিনে আট-দশ কোটি টাকার বেচাকেনা হয়। তাঁর ভাষ্য, হাটটি রেলস্টেশন থেকে প্রায় ৫০০ মিটার দূরে। ট্রেন চালু হলে ব্যবসা-বাণিজ্যের আরও প্রসার ঘটবে।

উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক লুৎফর রহমান বলেন, ‘বুকের ওপর দিয়ে ট্রেন যাবে; কিন্তু থামবে না, তা হবে না। আলটিমেটাম দেওয়া হয়েছে। এর পরও ট্রেন না থামলে সব ট্রেন থামিয়ে দিয়ে কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’

বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মিকাইল ইসলাম। তিনি বলেন, যথাযথ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।