মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, “জনগণের জন্য প্রাণিজ আমিষ (মাছ, মাংস, দুধ, ডিম) সরবরাহের কাজ জড়িত মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। পুষ্টির চাহিদা মেটানো রাষ্ট্রের দায়িত্ব। বিভিন্ন বয়সের নারী, পুরুষ এবং বিশেষ করে শিশুদের জন্য পুষ্টির যোগান দিতে পারা এই মন্ত্রণালয়ের কাজের সাফল্য বা ব্যর্থতা প্রমাণ করে। কাজেই এই মন্ত্রণালয়কে সব সময় সতর্ক থাকতে হয় এর উৎপাদন ও সরবরাহ ঠিক আছে কিনা।
জনগণের দৈনন্দিন জীবনের খাদ্যের চাহিদা মেটানো আমাদের প্রধান উদ্দেশ্য। তার পাশাপাশি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ রক্ষা করার কাজও করতে হয়। বিগত ১০০ দিনে দুটি অধিদপ্তরে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কাজকে ফলপ্রসূ করার জন্য প্রশাসনিক সংস্কারের কাজ যেমন বদলি, বঞ্চিত ও বৈষম্যের শিকার কর্মকর্তাদের পদায়ন, পদন্নোতির কাজ করা হয়েছে। এই কাজ এখনো চলমান আছে। এসব পরিবর্তন অধিদপ্তরের কার্যক্রমের গতিশীলতা বৃদ্ধি এবং দক্ষতা উন্নয়নে সহায়ক হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন উপদেষ্টা।”
গতকাল মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালায়ের সম্মেলন কক্ষে আন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালায়ের ১০০ দিনে কাজের অগ্রগতি উপলক্ষ্যে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, “আগস্ট মাসের বন্যায় কৃষির পাশাপাশি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ১৩টি জেলার ৮৮টি উপজেলায় এক লক্ষ ৯৭ হাজার ১৬৬টি পুকুর/দিঘি/খামারের ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতি হয়েছে ১০৭৫১৭ মেট্রিক টন মাছ ও চিংড়ি, পোনা নষ্ট হয়েছে ৪৪ কোটি। মৎস্যখাতে মোট ক্ষতি ১৮৯৯ কোটি টাকা। অন্যদিকে গবাদি পশু (গরু ২.৬০ লক্ষ, মহিষ ৮ হাজার, ছাগল ৯৩ হাজার, ভেড়া ১০ হাজার,মুরগি ৩৪.২১ লক্ষ, হাঁস ৪.৬০ লক্ষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, মারা গেছে ৩৯০০০ গরু, ১৬ হাজার ছাগল, মুরগি ২১ লক্ষ, হাঁস ২ লক্ষ। প্রায় ৭ লক্ষ ৮২ হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। মোট ক্ষতির পরিমাণ টাকার অংকে ৪২৮ কোটি টাকা।”
তিনি আরও বলেন, “বন্যা উপদ্রুত এলাকায় জরুরিভিত্তিতে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উদ্যোগে ২২০ মেট্রিক টন দানাদার পশুখাদ্য, ৭৫ মেট্রিক টন খড় ও ৩৫৭ মেট্রিক টন সাইলেজ ও ৬০ হাজার উন্নত জাতের ঘাসের কাটিং বিতরণ করা হয়েছে। তাছাড়া FAO কর্তৃক প্রায় ১২০০০ খামারিকে ১.৫ মাসের পশুখাদ্য প্রদান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। জরুরি ঔষধ সরবরাহ ও টিকা প্রদানসহ প্রায় ২ লক্ষ ৬৮ হাজার গবাদিপশু এবং হাঁসমুরগীর চিকিৎসা প্রদান, ১ লক্ষ ২৩ হাজার গবাদিপশু এবং হাঁসমুরগীর টিকা প্রদান করা হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় হতে উপদ্রুত এলাকায় পশু খাদ্য ক্রয় বাবদ ৩৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে।
তাছাড়া, এফএও এর মাধ্যমে ৮ হাজার ২৩৩ জন প্রান্তিক খামারিকে ৭৫ কেজি করে গো-খাদ্য বিতরণের কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। তাছাড়া ইআরডি এর নির্দেশনায় পুনর্বাসন পরিকল্পনা অনুযায়ী ডিপিপি প্রণয়ন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। মৎস্য খামারিদের সরকারি মৎস্য বীজ উৎপাদন খামার থেকে স্বল্প মূল্যে পোনা সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বন্যাকবলিত এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্যচাষীদের মাঝে মাছের পোনা অবমুক্তকরণ কার্যক্রমের আওতায় ১২টি জেলার ৮৮টি উপজেলায় ৮৪৮৮জন সুফলভোগী মৎস্যচাষী পুকুরে ২ কোটি ৩ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ৫১ মে.টন পোনা অবমুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়াও অন্যান্য উপকরণ সহায়তা দেয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ছোট বড় মৎস্য খামারিদের সহজ শর্তে ঋণ প্রদানের জন্য কৃষি ঋণ বিতরণকারী ব্যাংক এবং এনজিওদের আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিদ্যমান ঋণের কিস্তি এক বছরের জন্যে স্থগিত রাখার ব্যবস্থা গ্রহণ করার সুপারিশ করা হয়েছে। বন্যা কবলিত এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত খামারে দ্রুত বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান এবং খামারিদের বকেয়া বিলের জন্য সংযোগ যেন বিচ্ছিন্ন না করা হয় এজন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের কাছে সুপারিশ করা হয়।”
উপদেষ্টা বলেন, মৎস্য খাত জিডিপিতে ২.৪৩% এবং কৃষি জিডিপিতে ২২% অবদান রাখে। রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক আয়ের ১% অর্জন করছে। নদী, বিল, হাওরসহ শত শত জলাশয়ের পাশাপাশি সামুদ্রিক মাছ আহরনের সাথে জড়িয়ে আছে কয়েক লাখ মানুষ। মাছের উৎপাদন/আহরণ বাড়ানোর পাশাপাশি মৎস্যজীবিদের জীবিকা রক্ষার কাজ করা হয়েছে।
মৎস্য খাতের কাজের মধ্যে ইলিশ আহরণ সংক্রান্ত কাজ করা হয়েছে। ‘মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান-২০২৪’ এর আওতায় মোট ২ হাজার ১৬৫টি মোবাইল কোর্ট ও ৯ হাজার ৮০২টি অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এ সকল মোবাইল কোর্ট ও অভিযানের মাধ্যমে ৫৪.৮৪ মে.টন ইলিশ জব্দ, ৬১১.৬৩৮ লক্ষ মিটার জাল আটক, ৩ হাজার ২৫টি মামলা দায়ের, ৭৫.২৭৩ লক্ষ টাকা জরিমানা আদায় এবং ২ হাজার ৯ জনকে জেল প্রদান করা হয়েছে।
তিনি বলেন, অভিযান চলাকালীন জেলেদের জন্য মানবিক সহায়তা প্রদানের জন্য এবছর মোট ১৪১৬৪.১২৫ টন চাল ৫৬৬৫৬৫টি জেলে পরিবারের মাঝে বরাদ্দ করা হয়েছে যার মধ্যে ১৩৯৬২.১ টন চাল ৫৫৬৫৬০টি জেলে পরিবারের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে (বিতরণের হার ৯৯%)। আগামীতে ৪০ কেজি মাসিক ভিজিএফ এর পরিবর্তে ৫০ কেজি এবং ২৫ কেজি এর পরিবর্তে ৪০ কেজি চাল বরাদ্দ দেয়ার জন্য উদ্যোগ নেয়া হয়েছে এবং সকল জেলে যাতে সরকারের সুবিধা পেতে পারে তার জন্য জেলেদের তালিকা হালনাগাদ করার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
এবারের মা ইলিশ রক্ষার অভিযান সফল হয়েছে এবং ইলিশের ডিম ফুটার হার ছিল গড়ে ৫৪%, কোথাও ৭০% এরও বেশি হয়েছে। ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্প এর আওতায় বিগত তিন মাসের (আগস্ট- অক্টোবর/২০২৪) মাসে ১,৪২৪টি ইলিশ আহরণকারী জেলে পরিবারের মাঝে ১,৪২৪টি বিকল্প আয়ের উপকরণ (এআইজি) বিতরণ এবং ১,৮২৫ জন সুফলভোগী ইলিশ জেলেকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ইলিশ রক্ষার জন্য অবৈধ জাল আটক এবং কারখানায় অভিযান চালানো হয়েছে। মুন্সিগঞ্জে কারখানায় অভিযান চালিয়ে ২৪.৯০ লক্ষ মিটার এবং ৬৬০০ পিস রেইল আটক করা হয়েছে। এই অভিযান অব্যাহতঁ আছে। এবং কারখানাগুলো বন্ধ করার চেষ্টা চলছে। ইলিশ রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে গত ১০ বছর ধরে। তবুও দুর্গা পুজার সময় ৩৯৫০ মেট্রিক টন রপ্তানীর অনুমতি দেয়া হলেও ভারতে গেছে মাত্র ৬৬৫ মেট্রিক টন।
উপদেষ্টা বলেন, দেশীয় মাছের অন্যতম প্রধান উৎস হাওর মৎস্য সম্পদ ব্যবস্থাপনার জন্য সিলেটের ৭টি জেলার হাওর অঞ্চলের মৎস্য সম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট সকল মৎস্যজীবী ও অন্যান্য অংশীজনের সাথে মতবিনিময় করা হয়। হাওর অঞ্চলে মৎস্যসম্পদ বিশেষত দেশীয় প্রজাতির মাছ সংরক্ষণ, টেকসই আহরণ ও জৈবিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে আলোচনা হয়।
মৎস্যসম্পদ রক্ষায় হাওড় ম্যানেজমেন্ট এ্যাকশন প্লানের উপর গুরুত্বারোপ করা হয়। এতে প্রচলিত রাজস্ব আহরণভিত্তিক হাওর ব্যবস্থাপনা থেকে বের হয়ে বিজ্ঞানভিত্তিক জৈব ব্যবস্থাপনা ও কো-ম্যানেজমেন্টকে গুরুত্ব দেয়া হবে। সাসটেইনেবল কোস্টাল এন্ড মেরিন ফিশারিজ প্রজেক্ট এর আওতায় BS-1 স্যাটেলাইট ব্যতিত সামুদ্রিক ০৫টি বাণিজ্যিক মৎস্য ট্রলারে Vessel monitoring এর জন্য V-SAT Marine Transmission Unit (MTU) সংযুক্ত করা হয়েছে। বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট প্রশিক্ষণের পরিধি বাড়ানো হয়েছে।
উপদেষ্টা আরও বলেন, প্রাণিজ আমিষের অন্যতম প্রধান উৎস হচ্ছে দেশীয় মাছ জলবায়ুর পরিবর্তন, অতিআহরণ, ইত্যাদি নানাবিধ কারণে এসব দেশীয় মাছ হারিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। দেশীয় মাছকে সুরক্ষার লক্ষ্যে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট গবেষণা পরিচালনা করে ইতোমধ্যে ৪০ প্রজাতির দেশীয় মাছের প্রজনন ও চাষাবাদ প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে।
দেশীয় ঘাউরা, শাল বাইম, পোয়া, গোতালি, বটিয়া লোহাচাটা, ডেগরা ও বোল মাছকে সুরক্ষার লক্ষ্যে ইনস্টিটিউট হতে গবেষণা পরিচালনা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে দেশে প্রথমবারের মত গোতালি মাছের কৃত্রিম প্রজননে ইনস্টিটিউট প্রাথমিক সফলতা অর্জন করেছে। কৃষি ব্যাংকের মতো মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ ব্যাংক গঠনের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে আমদের অনুরোধের প্রেক্ষিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এনবিআরকে অগ্রিম আয়কর কমানোর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, কৃষি বিপণন অধিদপ্তর, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর এবং পোল্ট্রি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থা/প্রতিষ্ঠানের নেতৃবন্দের সমন্বয়ে গঠিত জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের মতামতের ভিত্তিতে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর ২০২৪ সালের মুরগি (সোনালী ও ব্রয়লার) ও ডিমের যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণ করেছে। একদিন বয়সী মুরগির বাচ্চা সংক্রান্ত প্রণীত কৌশলপত্র অনুযায়ী উৎপাদন, সরবরাহ এবং বিক্রয় মূল্য ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (বিএবি) কে যথাযথভাবে প্রতিপালনের নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে এবং মাঠ পর্যায়ে তদারকি করা হচ্ছে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে খামারিদের বিদ্যুৎ বিলে কৃষির ন্যায় ২০% ভর্তুকি দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিদ্যুৎ বিভাগকে অনুরোধ করা হয়েছে। চুক্তিবদ্ধ খামারিদের সাথে প্রান্তিক খামারিদের হাঁস-মুরগি পালন ও লভ্যাংশের প্রতিযোগিতার পার্থক্যকে কিভাবে কমিয়ে আনা যায় তার একটি কৌশলপত্র প্রণয়ন করার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। তৃণমূল পর্যায়ে খামারিদের সম্পৃক্ত করে ফিডের মূল্য, একদিন বয়সী মুরগির বাচ্চার যৌক্তিক মূল্য নির্ধারণে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
উপদেষ্টা আরও বলেন, আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে বন্যার প্রভাবে ডিমের সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিয়েছিল। একই সাথে কৃষি ফসলও নষ্ট হবার কারণে বাজারে সব্জির সরবরাহ কম ছিল। ফলে ডিমের চাহিদাও সাভাবিকের তুলনায় বেশি ছিল। তাই ডিমের দাম নিয়ে বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়। এবং একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীরা এই সুযোগে মুনাফা লাভের জন্য ডিমের সরবরাহে হস্তক্ষেপ করে।
এ বিষয়ে ভোক্তা অধিকার যথেষ্ট অভিযান চালিয়েছে এবং দাম নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেছে। অন্যদকে টিসিবি এবং ট্রাকে করে ন্যায্য মূল্যে ডিম বিক্রির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তর থেকে খামারি পর্যায় থেকে সরাসরি বাজারে ডিম আনার ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। বর্তমানে খামারি পর্যায়ে ১৩৩-১৩৪ টাকা, কর্পোরেট পর্যায়ে ১২৭ টাকা, পাইকারী পর্যায়ে ১৩২ টাকা এবং খুচরা পর্যায়ে ডিমের মূল্য ১৪০-১৪২ টাকা ডজন। এই দাম আরো কমতে পারে যদি উৎপাদন খরচ বিশেষ করে ফিড, একদিনের বাচ্চা এবং বিদ্যুতের দাম কমানো যায়।
কৃষি বিপণনের মাধ্যমে ভর্তুকির মাধ্যমে সীমিতভাবে ঢাকা শহরে ১১০ টাকা ডজন হিসেবে বিক্রি করা হচ্ছে। ডিম আমদানির যে ঘোষণা এসেছে তা নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে কিছু উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। কারণ এতে খামারিরা ক্ষতিগ্রস্থ হবেন এবং বিশ্ব প্রাণিস্বাস্থ্য সংস্থার গাইড লাইন অনুযায়ী বার্ড ফ্লুমুক্ত জোনিং বা compartmentalization সাপেক্ষে রপ্তানীকারক দেশের উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সার্টিফিকেট নিতে হবে, এটা ঠিক মতো করা না হলে আমাদের পোল্ট্রির শিল্প ঝুঁকিতে পড়তে পারে। আমদানিকৃত ডিমের সাথে বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিতে পারে এবং পোল্ট্রি শিল্প বিপর্যয়ের সম্মুখীন হতে পারে।
উপদেষ্টা বলেন, অপ্রয়োজনীয় খরচ কমাতে LDDP এ বিশ্বব্যংকের ঋণের টাকা ১২৫৩ কোটি টাকা (১০০ মিলিয়ন ডলার) ফেরত দেয়া হয়েছে। এই অর্থ আমাদের দেশেই থাকবে, ইআরডির মাধ্যমে অন্য প্রয়োজনীয় খাতে ব্যবহার করা যাবে। One Health Concept এর উপর ভিত্তি করে ১টি প্রাক খসড়া প্রকল্প প্রস্তাব (PDPP) এবং অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (এএমআর) এর বিষয়ে আর একটি প্রাক খসড়া প্রকল্প প্রস্তাব (PDPP) ইআরডিতে প্রেরণ করা হয়েছে।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে ভেটেরিনারি সাইন্স ও এনিমেল হ্যাজবেন্ডি ডিসিপ্লিনের ডিগ্রিধারী গ্রাজুয়েটদের মধ্যে বিরাজমান অসন্তোষ দূরীকরণের জন্য একাধিক সভা করা হয়। উভয় ডিগ্রিধারী কর্মকর্তাদের পারষ্পারিক সমঝোতার মাধ্যমে অধিদপ্তরের দুটি পেশাগত ধারাকে একীভূতকরণের উদ্যোগ সফল হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে ঋণের লক্ষ্যমাত্রা যথাক্রমে ১৩৫ এবং ১৫% যা প্রচলিত ব্যাংকিং ব্যবস্থায় মাধ্যমে বিতরণ করা হচ্ছে, যা প্রয়োজনের তুলনায় পর্যান্ত নয় এবং সুদের হারও বেশি। তাই কৃষি ব্যাংকের মতো মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে ‘মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন ব্যাংক গঠনের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। এই খাতে গতিশীলতা আনতে তা কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে আমাদের বিশ্বাস।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ.টি.এম মোস্তফা কামাল, অতিরিক্ত সচিব সৈয়দা নওয়ারা জাহান, বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান সুরাইয়া আখতার জাহান, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মোহাম্মদ রেয়াজুল হক, মৎস্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ড. মোঃ আবদুর রউফসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।