বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রি নিয়ে ফিরেছেন নিজ গ্রামে। নিজের শিক্ষা আর জ্ঞান শিশুদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে চাকরি নিয়েছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। শুধু তাই নয় স্কুলের চাকরির পাশাপাশি বরাবরই ভূমিকা রেখেছেন এলাকার উন্নয়নে। আর এবার কৃষিকাজ করে আলোচনায় এসেছেন কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার আচমিতা ইউনিয়নের পাইকসা গ্রামের মাহমুদ কামাল (৩৯)।
করোনার সময়ে স্কুল বন্ধ। কিন্তু বসে থাকতে শেখেননি মাহমুদ কামাল। পুরোদমে নেমে পড়েছেন কৃষিকাজে। কখনো তাকে দেখা যায় জমিতে হাল চাষ করতে। কখনো আবার পাট কাটা আর আঁশ ছাড়ানোয় ব্যস্ত সময় পার করেন তিনি। কখনো তাকে দেখা যায় পাট জাগ দিতে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বাবার জমিসহ আরও কিছু জমি লিজ নিয়ে করোনার সময়ে কৃষি কাজ শুরু করেন স্কুলশিক্ষক মাহমুদ কামাল। এরই মধ্যে ২৮০ শতক জমিতে ধান চাষ করে ফলন পেয়েছেন প্রায় ১৫০ মণ। এই ধান বিক্রি করেছেন প্রায় পৌনে দুই লাখ টাকায়। পুকুরে মাছ চাষ করে উপার্জন করেছেন লক্ষাধিক টাকা। পাট বিক্রি করেছেন ৬৪ হাজার টাকায়। সব মিলিয়ে তিনি লাভ করেছেন প্রায় দুই লাখ টাকা।
এলাকাবাসী জানায়, উচ্চ শিক্ষিত মাহমুদ কামালকে গ্রামের সাধারণ কৃষকদের মতো কৃষি কাজ করতে দেখে তারাও উৎসাহিত হচ্ছেন। এলাকার শিক্ষিত যুবকরা কৃষিকাজে এগিয়ে এলে এ পেশায় উৎকর্ষতা আরও বাড়বে বলে মনে করেন তারা।
জানা যায়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেছেন পাইকসা গ্রামের হারুন অর রশীদের ছেলে মাহমুদ কামাল। ২০০৬ সালে যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিষয়ে মাস্টার্স শেষ করেন তিনি। ছাত্র থাকা অবস্থাতেই দৈনিক যুগান্তরে কাজ করেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি হিসেবে। সেই সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন বিশ্বদ্যিালয় ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে। লেখাপড়া শেষে বাড়ি ফিরে পাইকসা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে চাকরি নেন।
মাহমুদ কামাল জাগো নিউজকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করার সময়ই ইচ্ছে ছিল গ্রামে ফিরে কিছু করার। তাই অন্য কোথাও আর চাকরির চেষ্টা করিনি। করোনায় স্কুল বন্ধ থাকায় কৃষিকাজ শুরু করেছি। এতে আর্থিকভাবে যেমন লাভবান হচ্ছি তেমনি শরীর আর মনও ভালো থাকছে।’