www.agribarta.com:: কৃষকের চোখে বাংলাদেশ
শিরোনাম:

৫ হাজার একর বোরো জমি অনাবাদি থাকার শঙ্কা

৫ হাজার একর বোরো জমি অনাবাদি থাকার শঙ্কা


 এগ্রিবার্তা ডেস্ক    ১৮ ডিসেম্বর ২০২২, রবিবার, ১১:০৮   পোল্ট্রি বিভাগ


নেত্রকোনার মদন উপজেলার মাঘান ইউনিয়নের কলাগাছিয়া হাওরে প্রায় পাঁচ হাজার একর বোরো জমি অনাবাদি থাকার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। প্রভাবশালীদের বাঁধ কেটে পানি নিষ্কাশন করে মাছ ধরার ফলে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে এলাকাবাসী সালিশ, মানববন্ধন এবং নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক বরবার লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

জেলা প্রশাসকের নির্দেশে বিষয়টি সরেজমিন দেখতে মদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা সম্প্রতি হাওর পরিদর্শনে যান। অভিযোগে জানা গিয়েছে, জেলার মদন উপজেলার মাঘান ইউনিয়নের রানীহালা, কাতলা, রোহুলী, ঘাটুয়া গ্রামের প্রায় পাঁচ হাজার একর জমিতে বোরো আবাদ হয় কলাগাছিয়া হাওরের পানি দিয়ে। এ বছর বোরো আবাদ শুরু করার আগেই মাঘান গ্রামের মাহাবুব মেম্বার, একই গ্রামের আবদুল গণি, ইয়াকুল, গাজী রহমান, রয়েলসহ কতিপয় প্রভাশালী মাছ ধরতে কলাগাছিয়া হাওরে ফসলরক্ষা বাঁধ কেটে পাশের খালে পানি ছেড়ে দেন। এতে করে হাওর পানিশূন্য হয়ে পড়ে। ফলে হাওরে কিছু অংশে লাগানো ধানের চারা পানির অভাবে মাটি ফেটে নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। ফলে এলাকার পাঁচ শতাধিক পরিবার একমাত্র বোরো ফসল আবাদ নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন।

বিষয়টি স্থানীয় মাঘান ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. জহিরুল ইসলাম মাসুদকে জানানোর পরও কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। সম্প্রতি রাণীহালা গ্রামের নিরঞ্জন চন্দ্র দাস, মুখশেদ আলী, সালেক মিয়া, আবদুল মজিদ, আবদুল হাইসহ এলাকার ১১০ জন গণস্বাক্ষর করে নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এলাকাবাসী হাওরের বাঁধ কাটার প্রতিবাদে ও জড়িতদের আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবিতে কলাগাছিয়া বাঁধের ওপর মানববন্ধন করেছে। এলাকাবাসীর দাবি, ইউপি চেয়ারম্যানের লোকজন বাঁধ কেটেছে। তাই চেয়ারম্যানকে জানানোর পরও তিনি কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

মানববন্ধনকারী প্রায় সবাই জানান, মাঘান গ্রামের লোকজন প্রভাব খাটিয়ে বাঁধটি মাছ ধরার নামে কেটে ফেলে। বাধা দেয়া অন্য গ্রামের নিরীহ মানুষকে নানা ভয়ভীতি প্রদর্শন করে। বাঁধটি কেটে ফেলায় চারটি গ্রামের একমাত্র বোরো ফসলি জমি অনাবাদি থাকবে।

এ ব্যাপারে মাঘান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জহিরুল ইসলাম মাসুদ বলেন, অভিযোগ দেয়ার কথা শুনেছি। তবে বিষয়টি যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে তা সঠিক নয়। দুই গ্রামের লোকজনের মধ্যে দীর্ঘদিন বিরোধ চলছে। ইউএনও স্যার এলাকায় গিয়েছিলেন। বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করা হবে।

মদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তাজজিনা শাহরীন বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর এসিল্যান্ড ও ভূমি অফিসের লোকজনকে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। যারা বাঁধ কেটেছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

কৃষকের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৫ ডিসেম্বর নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ মাঘান ইউনিয়নের কলাগাছিয়া হাওর পরিদর্শন করেন। এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কৃষি কর্মকর্তাকে কৃষকের স্বার্থে সেচের ব্যবস্থাসহ যা যা প্রয়োজন তার নির্দেশ দিয়ে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী এক চিলতে জমিও অনাবাদি রাখা যাবে না।’ তিনি বাঁধ কাটার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা করতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।




  এ বিভাগের অন্যান্য