জৈবসার-কীটনাশক উৎপাদন ও ব্যবহারের ওপর ৩০ কৃষককে প্রশিক্ষণ

কৃষি প্রতিষ্ঠান/
জাগোনিউজ টোয়েন্টিফোর

(৩ সপ্তাহ আগে) ১৪ নভেম্বর ২০২৩, মঙ্গলবার, ৯:২৯ পূর্বাহ্ন

agribarta

কীটনাশকের অত্যধিক ব্যবহার নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের পর জৈবসার, জৈব কীটনাশক উৎপাদন ও ব্যবহারের ওপর প্রশিক্ষণ পেলেন পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার ৩০ কৃষক।

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) উদ্যোগে সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দিনব্যাপী ঈশ্বরদী-পাবনা মহাসড়কের ব্র্যাক লানিং সেন্টার মিলনায়তনে এ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

বেলার রাজশাহী বিভাগীয় সমন্বয়কারী তন্ময় কুমার স্যানাল জানান, ফসলে রাসায়নিক কীটনাশকের অধিক ব্যবহার মানবদেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর ও পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি। 

তাই কৃষিতে রাসায়নিক কীটনাশক ও সার ব্যবহারের পরিবর্তে কৃষকরা জৈবসার ও জৈব কীটনাশক উৎপাদন এবং ব্যবহার করলে তা মানবদেহের জন্য অত্যন্ত নিরাপদ। জৈবসার ও কীটনাশক উৎপাদন করে তা ব্যবহার এবং কৃষকদের উদ্ধুদ্ধ করতে এ প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।

বেলার প্রধান কার্যালয়ের প্রোগ্রাম সমন্বয়কারী এ এম এম মামুন বলেন, কীটনাশক ব্যবহারের ফলে শুধু জমির উর্বরতা শক্তি নষ্ট হয় তা নয়, এই কীটনাশক ফসলি জমি থেকে খাল, বিল, নদী-নালায় গিয়ে আমাদের পরিবেশকে বিনষ্ট করছে। পাশাপাশি আমাদের স্বাস্থ্যহানি হচ্ছে। 

অথচ আমাদের যে প্রাকৃতিক কৃষি উপকরণ রয়েছে, প্রাকৃতিক সার ও বীজ রয়েছে এগুলো পুনরায় উৎপাদন ও ব্যবহার করে আমরা নিরাপদ কৃষি গড়ে তুলতে পারি। সেজন্য কৃষকদের দিনব্যাপী এ প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়েছে।

প্রশিক্ষণ শেষে ঈশ্বরদীর মুলাডুলির শেখপাড়া গ্রামের কৃষক শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের এলাকায় ব্যাপক শিম ও ঢ্যাঁড়শের আবাদ হয়। এখানে ব্যাপকভাবে রাসায়নিক কীটনাশক ও সারের ব্যবহার হয়। যা ফসলি জমি ও মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। আমরা দিনব্যাপী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জৈব কীটনাশক ও জৈবসার উৎপাদন এবং ব্যবহার সম্পর্কে জানতে পারলাম। আগামীতে জৈব পদ্ধতিতে সবজির আবাদ করবো, যাতে জমি ও পরিবেশ দুটোই নিরাপদ থাকে।

দিনব্যাপী এ প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অতিথি ছিলেন পাবনা সদর উপজেলা কৃষি অফিসার শাহানা পারভীন লাবনী। উপস্থিত ছিলেন বেলার প্রোগ্রাম সমন্বয়কারী এ এম এম মামুন, রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের ফিল্ড অফিসার সাইফুল ইসলাম। কৃষকদের দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ দেন প্রাকৃতিক কৃষিকেন্দ্র ও প্রাণবৈচিত্র্য খামারের সমন্বয়ক দেলোয়ার জাহান ও প্রাকৃতিক কৃষিকেন্দ্রের গবেষক ইফতেখার আলী।

পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলায় ২৬ বছর ধরে শিমের বাণিজ্যিক আবাদ হয়। এ উপজেলার মুলাডুলি ইউনিয়নের বেতবাড়িয়া, ফরিদপুর, আটঘরিয়া, বাঘহাছলা ও শেখপাড়া গ্রামে সবচেয়ে বেশি শিমের চাষ হয়। এখানকার ৯০ শতাংশ জমিতেই কৃষকরা শিমচাষ করেন।

তবে শিমের মৌসুম এলেই এখানকার গ্রামের বাতাসে ভেসে বেড়ায় কীটনাশকের গন্ধ। প্রতিবিঘা জমিতে কৃষকরা শিম আবাদে ৮-৯ হাজার টাকার কীটনাশক ব্যবহার করেন, যা অন্য কোনো আবাদে হয় না।