ঢাকা, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, সোমবার

জয়পুরহাটে আলুর দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে



জাতীয়

এগ্রিবার্তা ডেস্ক

(৩ মাস আগে) ৪ নভেম্বর ২০২৪, সোমবার, ১০:৩৭ পূর্বাহ্ন

agribarta

জয়পুরহাটে আলুর বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। মৌসুমের শুরুতে কৃষকরা এক কেজি আলু ১৪-১৫ টাকায় বিক্রি করলেও, জুন মাস থেকে বাজারে অস্বাভাবিক পরিবর্তন ঘটে। অক্টোবরের শেষে পাইকারিতে আলুর দাম ৫৫ টাকা হলেও, খুচরা বাজারে তা ৬০-৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত চার বছর ধরে এই পরিস্থিতি অব্যাহত রয়েছে। কৃষিসংশ্লিষ্টরা বলছেন, হিমাগার গেটে কারসাজির মাধ্যমে মজুতদার ও আড়তদাররা কৃত্রিম সংকট তৈরি করে দাম বাড়িয়ে দেন।

প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চে কৃষকের ঘরে আলু আসে এবং স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করা হয়। এরপর তারা হিমাগারে আলু মজুত করেন, যা জুলাই মাসে বাজারে আসতে শুরু করে। সেপ্টেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত দাম সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়।

গত শুক্রবার জয়পুরহাটের খুচরা বাজারে বিভিন্ন জাতের আলুর দাম ছিল ৬০ থেকে ৬৫ টাকা, যেখানে দেশি পাকড়ি লাল জাতের আলু ৭০ থেকে ৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছিল। হিমাগার গেটে পাইকারিতে আলুর দাম ৫৫-৫৬ টাকা এবং পাকড়ির দাম ৬০-৬২ টাকার মধ্যে ছিল। সরকার বারবার দাম কমানোর চেষ্টা করলেও বাজারে এর কোনো প্রভাব পড়েনি।

কৃষকরা জানান, উৎপাদন করলেও তারা ন্যায্যমূল্য পান না। মৌসুমের শুরুতে কৃষকের ঘরে থাকা আলুর দাম বাড়তে দেখা যায় না, কিন্তু হিমাগার থেকে বিক্রি শুরু হলে দাম দ্রুত বাড়তে থাকে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বর্তমানে কৃষকের হাতে আলু না থাকলেও হিমাগার মালিক ও মজুতদারদের কাছে পর্যাপ্ত পরিমাণ আলু রয়েছে। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে আড়তদাররা বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে।

কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, জয়পুরহাটে এবার ৩৮ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে আলু রোপণ করা হয়েছে, যার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮ লাখ ৯৫ হাজার ৮৫০ টন। তবে উৎপাদন হয়েছে ৮ লাখ ২৩ হাজার ১৩ টন।

পুনট কোল্ড স্টোরেজের ব্যবস্থাপক বিপ্লব কুমার ঘোষ জানান, তাদের হিমাগারে বর্তমানে ৮২ হাজার বস্তা আলু সংরক্ষিত আছে। কৃষকরা দাবি করছেন, সরকারের পক্ষ থেকে আলু সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হলে বাজার অস্থিতিশীলতা কমানো সম্ভব হবে।

আলু ব্যবসায়ী রমজান আলী বলেন, অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটই মূলত মূল্যবৃদ্ধির জন্য দায়ী। তিনি বলেন, যদি সরকার অভিযান চালিয়ে সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেয়, তাহলে বাজার স্বাভাবিক হতে বাধ্য।