দেশে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে। এতে নতুন করে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ফলে সর্বক্ষেত্রে মাস্ক পরাসহ আবদ্ধ স্থানে সভা না করা ও দাপ্তরিক সভাগুলো যথাসম্ভব অনলাইনে করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। প্রাণঘাতী এ ভাইরাসের সংক্রমণ আবারো বৃদ্ধি পাওয়ায় এমন পরামর্শ দিয়েছে সরকার গঠিত কভিড-১৯-সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। শনিবার রাতে কমিটির ভার্চুয়াল সভা থেকে এসব সুপারিশ করা হয় বলে কমিটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে, আবদ্ধ স্থানে সভা না করা, দাপ্তরিক সভাগুলো যথাসম্ভব অনলাইনে করার পাশাপাশি অপরিহার্য সামাজিক অনুষ্ঠান বা সভায় মাস্ক পরতে জনসাধারণকে উৎসাহিত করতে বলা হয়েছে। এছাড়া সব ক্ষেত্রে মাস্ক পরা, হাত ধোয়া বা স্যানিটাইজার ব্যবহার নিশ্চিত করাসহ স্বাস্থ্যবিধি মানতেও জনগণকে উৎসাহিত করার কথা বলা হয়েছে। নভেল করোনাভাইরাসের টিকার প্রথম, দ্বিতীয় ও বুস্টার ডোজ যারা নেননি, তাদের টিকা নিতে উদ্বুদ্ধ করার সুপারিশ করা হয়েছে। একই সঙ্গে বেসরকারি পর্যায়ে করোনাভাইরাস পরীক্ষার ব্যয় কমানোর পদক্ষেপ নিতে বলেছে কমিটি।
বছরের মাঝামাঝি সময়ে দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ অনেকটা কমে এসেছিল। গত জুলাইয়ের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে দিনে শনাক্তের হার ছিল নিম্নমুখী। তবে আগস্টের শেষ সপ্তাহ থেকে দৈনিক শনাক্তের হার আবার বাড়ছে। কয়েক দিন ধরে সংক্রমণ শনাক্তের এ হার ৯-১০ শতাংশের ঘরে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, গতকাল সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে করোনার সংক্রমণে কারো মৃত্যু হয়নি। তবে এ সময় ৫২৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। আগের দিন রোগী শনাক্ত হয়েছিল ১৪১ জন। ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ৪ হাজার ১৪৩টি নমুনা পরীক্ষা করলে একদিনে রোগী শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক ৭২। আগের দিন এ হার ছিল ৯ দশমিক ৬৬। দেশে এ পর্যন্ত ২০ লাখ ১৭ হাজার ৬১৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। করোনা থেকে সুস্থ হয়েছে ১৯ লাখ ৬০ হাজার ৬১৫ জন। করোনায় মারা গেছেন ২৯ হাজার ৩৩৯ জন।
কয়েক দিন ধরে প্রাণঘাতী করোনার সংক্রমণ কমছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সংস্থাটি বলছে, আগের সপ্তাহের তুলনায় সর্বশেষ সপ্তাহে সারা বিশ্বে সংক্রমণ ২৮ শতাংশ কমেছে। তবে কোনো কোনো দেশ বা অঞ্চলে সংক্রমণ বেড়েছে। বাংলাদেশে দেড়-দুই সপ্তাহ ধরে সংক্রমণ বাড়ছে বলে খোদ সরকারের পরিসংখ্যানে পাওয়া গিয়েছে।
উল্লেখ্য, দেশে প্রথম করোনা শনাক্ত হয় ২০২০ সালের ৮ মার্চ। এরপর থেকে দেশে করোনা সংক্রমণের চিত্রে কয়েক দফা ওঠানামা দেখা গিয়েছে।